গল্পঃ- Ex Girlfriend
পর্বঃ- ২৮
লেখকঃ- Md Monir Uddin Shisir
মায়ার বাবাঃ- কী বলতে চাও তুমি...
শিশিরঃ- আংকেল ছেলেটা একটা মাতাল
মায়ার বাবাঃ- ওহ বুঝেছি, নিশ্চয়ই তোমাকে এসব মায়া বলেছে
শিশিরঃ- হ্যা আংকেল, মায়া বলেছে
মায়ার বাবাঃ- এসব কথা আমি বিশ্বাস করি না
শিশিরঃ- আংকেল আপনার এই অন্ধবিশ্বাস আপনার মেয়ের জীবনকে ধ্বংস করে দিবে
মায়ার বাবাঃ- মানে? কী বলতে চাও তুমি
শিশিরঃ- মানেটা আপনি বুঝেও ভুল করছেন, আপনি ভালো করে খুঁজ নিয়ে দেখুন,ঐ ছেলে অনেক রাত পর্যন্ত বাহিরে মদ খেয়ে মাতলামি করে বেড়ায়
মায়ার বাবাঃ- তুমি কী করেছো জানো
শিশিরঃ- আংকেল মেয়েটা আপনার, সে শুধু আমূর বন্ধু এছাড়া অন্য কিছু না,এখন আপনিই ঠিক করুন কী করবেন,আপনার অন্ধবিশ্বাস আপনার মেয়ের জীবনে সর্বনাশ যেন না করে
মায়ার বাবাঃ- আচ্ছা তুমি যাও,আমি দেখছি বিষয়টা
শিশিরঃ- আচ্ছা আসি আংকেল, আসসালামু আলাইকুম
মায়ার বাবাঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম
এরপর আমি অফিসে যাওয়ার জন্য রওনা দিলাম, রিক্সায় করে যাচ্ছিলাম, যাওয়ার পথে দেখি একজন বয়ষ্ক মহিলার এক্সিডেন হয়েছে, আমি রিক্সা থেকে নেমে সেদিকে দৌড়ে গেলাম,গিয়ে দেখি একটা ছেলে মা বলে কান্না করে উঠলো
আমি এবং সেই ছেলেটা সহ আরও কয়েকজন মিলে মহিলাটাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম, অতিরিক্ত রক্ত করণ হওয়ার মহিলাটির রক্তের প্রয়োজন হয়,আমার গ্রুপের সাথে মিল ছিলো,তাই আমি নিজেই রক্ত দিলাম
রক্ত দেওয়ার পর আমার মাথাটা একটু ঝিমঝিম করে উঠলো,একটু পর ছেলেটা আমার কাছে এলো,ছেলেটাকে দেখে তো আমি অবাক সেটি আর কেউ নয় বরং সেই ছেলেটা যে আমার সম্পর্ক মেঘনার বাবা বলেছিলো, এবং আমাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বাধ্যা করেছিলো
শিশিরঃ- করিম তুমি
করিমঃ- ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দিন,আজকে আপনি না হলে আমার মাকে বাঁচাতে পারতাম না
শিশিরঃ- আচ্ছা এসব দাও এসব কথা, এখন আন্টি কেমন আছে
করিমঃ- জ্বি জ্ঞান ফিরেছে,ভাইয়া সেদিন আমার জন্য আপনার আর মেঘনার মাঝে ঝামেলা সৃষ্টি হয়েছিলো,আর আপনি আজকে রক্ত দিয়ে আমার মায়ের জীবন বাঁচালেন
শিশিরঃ- সব আল্লাহর ইচ্ছে, এতে কারো হাত নেই, আর তুমি এসব কথা বলো না,যা হওয়ার তা হয়েছে এখন চলো আন্টিকে দেখতে
করিমঃ- হুম চলেন
এরপর আমি আর করিম ওর মায়ের কাছে গেলাম
শিশিরঃ- এখন কেমম আছেন আন্টি
আন্টিঃ- অনকেটা ভালো লাগছে বাবা
করিমঃ- মা, ভাইয়া তোমাকে রক্ত দিয়েছে আর আমি একদিন ভাইয়াকে শহর ছাড়তে বাধ্যা করে ছিলাম (এই বলে কেঁদে দিলো)
শিশিরঃ- আরে তোমাকে না বলেছি,এসব কথা না বলতে
করিমঃ-... (চুপ কান্না করতেছে)
শিশিরঃ- আচ্ছা, আমি আসি এখন দেরি হয়ে গেছে অফিসে যেতে হবে
এরপর আমি অফিসের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম, ঘড়িতে দেখি প্রায় ২ টা বাজতে চললো, এরপর নাস্তা করে অফিসে গেলাম,গিয়ে দেখি অফিসে সবাই মন দিয়ে কাজ করছে কোনো সাড়া শব্দ নেই,আমি যাওয়ার সাথে সাথে পিয়ন এসে বললো
পিয়নঃ- আজ তোর এতো দেরি হলো কেন? ম্যাডাম খুব রেগে আছে,তাড়াতাড়ি যাও
শিশিরঃ- আচ্ছা দেখি
এরপর আমি ম্যাডামের কেবিনে গেলাম...
শিশিরঃ- ম্যাম আসতে পারি
মেঘনাঃ- জ্বি আসুন
আমি ভিতরে গেলাম,মেঘনা কোনোকিছু না বলে আমাকে থাপ্পড় মেরে দিলো
শিশিরঃ- ম্যাম..
মেঘনাঃ- চুপ একটাও বলবি না, এটা কী তোর বাপের অফিস যখন ইচ্ছে আসবি
শিশিরঃ- ম্যাম,একটা সমস্যার জন্য দেরি হয়ে গেছে
মেঘনাঃ- এই তোর সমস্যা হলে আমি কী করবো (ঠাসসস ঠাসসসস, এক সাথে দুইটা থাপ্পড় মেরে দিলো)
শিশিরঃ- ম্যাম,আমার কথাটা তো শুনুন
মেঘনাঃ- তোর কোনো কথা শুনতে হবে না,আমি কী তোর চাকরি করি যে তোর কথা শুনতে হবে
শিশিরঃ-... (চুপ)
মেঘনাঃ- ঐ তুই চুপ করে আছিস কেন? কথ বল
শিশিরঃ-... (চুপ)
মেঘনাঃ- আমার জবাব চাই,না হলে আজকে তোর খবর আছে
আমি কিছু বললাম না,চুপ করে চেয়ে আছি,আর চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে
মেঘনাঃ- চলে যা আমার সামনে থেকে
মেঘনার কথা শুনে আমি নিজের কেবিনে গেলাম,তিশা আমাকে টিস্যু দিলো
তিশাঃ- আমি সব শুনেছি শিশির
শিশিরঃ- বাদ দাও এসব
তিশাঃ- তুমি এতোকিছুর পর চুপ করে ছিলে
শিশিরঃ- না,থাক
এরপর আর কোনো কথা বলি নাই, কাজ শেষ করে বিকালে বাসায় চলে গেলাম
চলবে....
Post a Comment