গল্পঃ- ভাবির ছোট বোন...
পর্বঃ- ২০
লেখকঃ- Md Monir Uddin Shisir
আমরা পার্কে ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যা হয়ে এসেছে,তাই আমরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য একটি রিক্সা ডেকে নিলাম
মর্জিনাঃ- আমরা এখন কোথায় যাচ্ছি
শিশিরঃ- কোথায় মানে,বাড়ি যাবে না
মর্জিনাঃ- না
শিশিরঃ- মানে কী?
মর্জিনাঃ- মানে হচ্ছে, আমরা ইচ্ছে করছে আজ সারারাত তোমার কাঁদে মাথা রেখে রিক্সায় ঘুরে বেড়াবো
শিশিরঃ- পাগলী একটা,রাতে কেউ রিক্সায় ঘুরে বেড়ায়
মর্জিনাঃ- কেন? কী হবে
শিশিরঃ- কিছু হবে না, এখন সোজা বাড়ি যাবো,বুঝেছো
মর্জিনাঃ- হুম বুঝেছি
এরপর আমরা বাসায় চলে গেলাম, বাসায় পৌঁছাতে প্রায় রাত নয়টা বেজে গেছে
মাঃ- তোরা এসেছিস
শিশিরঃ- হুম
মাঃ- আমার তো খুব চিন্তা হচ্ছিল, এতো পরে আসলি কেন?
ভাবিঃ- মা,আপনি শুধু শুধু চিন্তা করছেন
মাঃ- শুধু শুধু নয় বউমা,যদি পথে কোনো সমস্যা হতো,যদি মেয়েটার কিছু হয়ে যেতো
ভাবিঃ- মা,শিশির বেঁচে থাকতে মর্জিনার কিছু হতে দিবে না
মাঃ- তোরা ফ্রেশ হয়ে আয়
ভাবিঃ- হুম,তাই কর তোদের জন্য আমরা না খেয়ে আছি
এরপর আমরা ফ্রেশ হয়ে খেতে গেলাম
ভাইয়াঃ- মা,একটা কথা বলি
মাঃ- হুম বল
ভাইয়াঃ- মা,শিশির আর মর্জিনার দু-হাত এক করে দাও
মাঃ- আমিও তাই ভাবছি,এজন্যই আমি কালই বেয়াইনের সাথে কথা বলবো
ভাবিঃ- মা,শিশির আর মর্জিনা লজ্জা পাচ্ছি, কথাগুলো তাদের সামনে না বললে কী নয়
আমি আর মর্জিনা খাওয়া শেষ করে করেই চলে গেলাম
মাঃ- হুম তাই তো,আমি তো খেয়ালই করেনি
ভাবিঃ- আর হ্যা তুমি (ভাইয়াকে উদ্দেশ্য করে), ওদের সামনে কেন ঐকথা বলতে গেলে,এখন তুমি খাও সব
মাঃ- আচ্ছা বউমা,তুমি গিয়ে ওদের রুমে খাবার গুলো দিয়ে এসো
ভাবিঃ- আচ্ছা মা।
এরপর ভাবি আমাদের যার যার রুমে খাবার দিয়ে গেলো,আমি খাওয়া দাওয়া শেষ করেছি এমন সময় একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলো,আমি রিসিভ করে বললাম
শিশিরঃ- আসসালামু আলাইকুম
ইতিঃ- ওয়ালাইকুম আসসালাম
শিশিরঃ- কে আপনি
ইতিঃ- তুমি কেমন আছো
শিশিরঃ- আপনি কে?
ইতিঃ- আমাকে চিনতে পারছো না
শিশিরঃ- না তো,কে আপনি
ইতিঃ- আগে কথা দাও,আমি কে বললে ফোর কাটবে না
শিশিরঃ- আচ্ছা বলো
ইতিঃ- আমি ইতি
শিশিরঃ- ওহ,আপনি
ইতিঃ- হুম,তুমি কেমন আছো
শিশিরঃ- আলহামদুলিল্লাহ ভালো, আপনি
ইতিঃ- আলহামদুলিল্লাহ ভালো, কী করতেছো তুমি
শিশিরঃ- কিছু না বসে আছি
ইতিঃ- খাওয়া দাওয়া করেছো
শিশিরঃ- হুম করেছি
ইতিঃ- তুমি জানো আমি কোন ইতি
শিশিরঃ- কেন? কলেজের ইতি আপু তাই না
ইতিঃ- হুম তাই,কিন্তু আমার আরও একটা পরিচয় আছে তোমাকে জানানোর
শিশিরঃ- কী পরিচয়
ইতিঃ- ছোট বেলায় তুমি একটি মেয়ের সাথে স্কুলে যেতে মনে আছে তোমার
শিশিরঃ- হুম মনে আছে,ওর নামও তো ইতি
ইতিঃ- হুম,আচ্ছা তোমার কী ঐমেয়ের কথা মনে পড়ে না
শিশিরঃ- মনে পড়ে সে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিলো,কিন্তু
ইতিঃ- কিন্তু কী??
শিশিরঃ- আমি গরীবের ছেলে বলে ছোট বেলায় ওর বাবা ওকে নিয়ে শহরে চলে গিয়েছিলো
ইতিঃ- হুম জানি
শিশিরঃ- এক মিনিট, আপনি এতোকিছু কীভাবে জানেন
ইতিঃ- কারণ আমিই তোমার ছোট বেলার সাথী ইতি
শিশিরঃ- কী😱 আপনি
ইতিঃ- হুম,কিন্তু তুমি তো আমার সহপাঠী ছিলে,কিন্তু এখন আমার এক বছরের জুনিয়র কী ভাবে
শিশিরঃ- আমি পারিবারিক সমস্যার জন্য এক বছর পড়তে পারি নি
ইতিঃ- শিশির আমি তোমাকে অনেক বছর পর ফিরে পেয়েছি, আর তোমাকে হারাতে চায় না, তুমি আমাকে বিয়ে করে নাও
শিশিরঃ- এই আপনি কী বলছেন, আপনি জানেন আমি একজনকে ভালোবাসি
ইতিঃ- ঐমেয়েকে তুমি ভুলে যাও
শিশিরঃ- কী বলেছেন আপনি
ইতিঃ- হ্যা,আমি ঠিকই বলছি,তুমি শুধু আমার
শিশিরঃ- সরি, আপনি ভুল করছেন আমি শুধু মর্জিনার, আর কিছুদিনের মধ্যে আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছে
ইতিঃ- না শিশির,তা হতে পারে না,তুমি একটা বার আমার কথা ভেবে দেখো
আমি ইতির সাথে কথা বলছি এমন সময় মর্জিনা আমার রুমে এসে আমাকে কথা বলতে দেখে বললো
মর্জিনাঃ- এতো রাতে তুমি কার সাথে কথা বলছো
শিশিরঃ- কেউ না,তুমি যাও
ইতিঃ- কে এসেছে
শিশিরঃ- আপনি ফোন রাখুন,আমি আপনার সাথে কথা বলতে চায় না
মর্জিনাঃ- তুমি আবারও ঐমেয়ের সাথে কথা বলছো(রেগে)
শিশিরঃ- তুমি শান্ত হও
মর্জিনাঃ- না আমি শান্ত হতে পারি না
শিশিরঃ- আচ্ছা তুমি কথায় কথায় রেগে যাও কেন,শান্ত হয়ে কথা বলতে পারো না
মর্জিনাঃ- না আমি পারছি না,তুমি কারো সাথে কথা বললে আমার গায়ে আগুন জ্বলে,আমি সব সহ্য করতে পারি,কিন্তু তোমার অবহেলা সহ্য করতে পারবো না
শিশিরঃ- এই পাগলী,আমি তোমায় অবহেলা করবো কেন? তুমি তো আমার কলিজা (বুকে জড়িয়ে ধরে)
মর্জিনাঃ- ছেড়ে দাও আমাকে,তুমি ঐমেয়েটার কাছে যাও
শিশিরঃ- সত্যি যাবো
মর্জিনাঃ- হুম যাও
শিশিরঃ- ওকে আমি যাচ্ছি (একটু এগিয়ে গেলাম)
মর্জিনাঃ- কুত্তা, বিড়াল,ইদুর
শিশিরঃ- এই এই কী বলছো এগুলো
মর্জিনাঃ- উমমমা উমমমা (কিস দিয়ে জড়িয়ে ধরে) আর কোনোদিন আমাকে ছেড়ে যাওয়ার কথা মুখে আনলে
শিশিরঃ- কোনোদিন ছেড়ে যাবো না পাগলী,এখম তুমি যাও রাত অনেক হয়েছে, এবার ঘুমাও
মর্জিনাঃ- তুমি সাবধানে থেকে
শিশিরঃ- হুম
এরপর মর্জিনা চলে গেলো,আমিও ঘুমিয়ে গেলাম,ঘুম ভাঙলো পরদিন সকালে...
চলবে...
Post a Comment