গল্প জ্বিনের সংসার

পর্ব - ০৯

#লেখক__মোঃ__নিশাদ


মাঝ রাতে সবাই একটা কান্নার আওয়াজ পান। আওয়াজটা পেয়ে ভয়ে সবাই উঠে বসেন। 


____এদিকে জান্নাতের বাবা ও মামা বাড়ির সবাইকে বলে, কেউ ভয় পেওনা। আর একটা কথা কবিরাজ বলছে যতই যাই হোক কেউ রুম থেকে বাইরে বের হবেনা। 


জান্নাতের বাবার কথায়, রুমে লাইট জ্বালিয়ে সবাই বসে থাকে। একটু পর কান্নার আওয়াজ থেমে যায়।  


 কান্নার আওয়াজ থেমে যেতেই শুরু হয় আরেক ভয়ানক কান্ড। বৃষ্টির মত করে একের পর এক টিনের চালে ঢিল পড়তে থাকে।  


এদিকে ঢিল পড়ায় ভয়ে সবাই কান চেপে রেখে দোয়া পড়তে থাকে। 


____বেশ কিছুক্ষন পর ঢিল পড়া বন্ধ হয়। আস্তে আস্তে সব কিছু থেমে যায়। 


সব থেমে যাওয়ায়, সবাই আবার ঘুমিয়ে পড়ে। 


পরেরদিন সকালে, জান্নাতের মামা ও বাবা বাইরে বেড়িয়ে টিনের চালে উঠে দেখেন কোন চিহ্ন নেই। মানে কাল রাতে যে এত ঢিল পড়লো টিন ভেঙে যাওয়া কথা সেই জায়গায় কোন চিহ্ন নেই।। 


এরকম অবস্থায় জান্নাতের মামা ও বাবা। বুঝতে পারলেন এটা নিশ্চয়ই ওই সারফারাজ জ্বিনের কাজ। 


____যাইহোক, দিনের বেলা সব সাভাবিক ছিলো। জান্নাত ও জান্নাতের বর আশপাশটা ঘুরে দেখলো। 


সবি ঠিক ছিলো দিনের বেলা। 


সমস্যা হয় সেই রাতে।। 


রাতে জান্নাতের বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ জান্নাতের মামা এসে জান্নাতের বাবাকে ডাক দিলেন আর বললেন। 


জান্নাতের মামা - দুলাভাই, আপনাকে একটা কথা বলার জন্য ডেকে তুললাম। 

জান্নাতের বাবা - এত রাতে আবার কি কথা বল। 


 জান্নাতের মামা- দুলাভাই, আমি বাইরে বাথরুমে গিয়েছিলাম৷ তখন হঠাৎ দেখলাম জান্নাতের বর, আমাদের পিছনে একটু দূরে যে বাঁশ ঝাড় আছেনা ওই বাঁশ ঝাড়ের দিকে যাচ্ছে । 


 জান্নাতের বাবা- হ্যাঁ যেতেই পারে, হয়তো হাঁটাহাটি করছে। 


জান্নাতের মামা- আহ হা, দুলাভাই একবার ভেবে দেখুন, এখন রাত বারোটা কি একটা এত রাতে কেউ বাইরে হাঁটতে যায়। আর হাঁটতে বের হলে কি বাশঁঝাড়ে হাঁটতে জাবে নাকি । 


জান্নাতের বাবা- হ্যাঁ ঠিক তো৷ তা এখন কি করবো সেটা বল। 

জান্নাতের মামা- বিষয়টা সন্দেহ জনক আমি গত কাল রাতেও দেখছি আমাদের জামাই জান্নাতের বর বাইরে যায়। এখন আমাদের কাজ হলো ওর পিছু পিছু যাওয়া আর দেখা জামাই বাঁশঝাড়ে কি করে৷ 


জান্নাতের বাবা- ওকে তবে তাই হোক, চল এখনি জামাইয়ের পিছু নেই আর দেখি ওনি কই যায় কি করে। 


 এই বলে জান্নাতের বাবা ও মামা মিলে জান্নাতের বরের পিছন পিছন হাঁটতে লাগলেন। 


নিশি রাত৷ খুব সাবধানে জান্নাতের বাবা ও মামা, জান্নাতের বরের পিছন পিছন যাচ্ছে।


পিছন পিছন যেতে এক সময় জান্নাতের বাবা ও মামা থেমে যায়৷ তাঁরা দুজনে একটু দূর থেকে খেয়াল করে। জান্নাতের বর বাঁশ ঝাড়ে একটা জায়গায় থেমে গেলো৷ আর বসে পড়লো৷ 


 তাঁরা দুজন আরো খেয়াল করে। জান্নাতের বরের পাশে আরো তিনটি কালো কুচকুচে ছাঁয়ার মত কি যেনো বসে আছে, আর তাঁরা চারজনি কি যেনো খাচ্ছে। 


এই রাতের বেলা, তিনটা কালো কুচকুচে অবয়বের সাথে জান্নাতের বর কি করে কি খায়। 


এই ভেবে জান্নাতের মামা, সাথে নিয়ে আসা লাইটটা সেই দিকে মারে। 


লাইট মারতেই জান্নাতের মামা ও বাবা দেখেন সেখানে থাকা চারজন কাঁচা মাছ ও একটা আসতো ছাগলের কাঁচা মাংস চিবিয়ে চিবিয়ে খাচ্ছে। 


___এদিকে জান্নাতের বর ও তিনটা অবয়বের দিকে লাইট মারতেই তাঁরা চারজনি মহূর্তে শেয়ালের রুপ ধারণ করে। 


চোখের সামনে নিজের মেয়ের জামাইকে শেয়ালের রুপ ধারণ করতে দেখে জান্নাতের বাবা একটা চিৎকার দেন। 


ঠিক তখনি সেখানে থাকা শেয়াল গুলো, রাগে গড়গড় করতে করতে এগিয়ে আস্তে শুরু করে। 


এই দেখে জান্নাতের মামা ও বাবা বাড়ির দিকে এক দৌড় দেন। 


দৌড়াতে দৌড়াতে দুজনে একটু পর বাড়িতে আসেন। বাড়িতে এসে হাঁফাতে হাঁফাতে জান্নাতের বাবা জান্নাতের মা কে ডাকতে থাকেন। 


জান্নাতের বাবা ও মামার ডাকে জান্নাতের মা দরজা খুঁলে জিজ্ঞেস করেন। 


জান্নাতের মা - এই কি হইছে, তোমরা দুজনে এত রাতে কোথা থেকে আসলে, এভাবে হাফাচ্ছে কেনো। কোথায় গিয়েছিলে বলো। 


জান্নাতের বাবা - আর বলোনা জান্নাতের মা, এটা আমরা কি দেখলাম। 😢


 জান্নাতের মা- আরে কি হইছে বলবেন তো। কান্না করছেন কেনো। 


জান্নাতের বাবা- অনেক আশা নিয়ে মেয়েটাকে বিয়ে দিলাম৷ ভেবেছিলাম জান্নাতের বিয়ে দিলে সব ঠিক হয়ে জাবে, কিন্তু কিছু ঠিক হলোনা জান্নাতের মা। জানো কি হইছে, আমাদের জামাই জান্নাতের বর নাকি রোজ গভীর রাতে বাইরে বাঁশ ঝাড়ের দিকে যায়। তাই তোমার ভাই আর আমি আজকে কিছুক্ষন আগে জামাইয়ের পিছু নেই, পিছু নিয়ে বাঁশ ঝাড়ে গিয়ে দেখি জান্নাতের বর আমাদের জামাই তিনটা কালো কুচকুচে অবয়বের সাথে বসে কাঁচা মাছ মাংস খাচ্ছে। সবথেকে ভয়ের বিষয় হলো আমরা তখন লাইট মারতে আমাদের চোখের সামনে জান্নাতের বর শেয়ালের রুপ ধারণ করলেন। 


 জান্নাতের মা - কিহহহ। 😲

কিহ বলছো তোমরা। জামাই শেয়ালের রুপ নিলো মানে। 


জান্নাতের মামা: আপা দুলাভাই ঠিকি বলছে৷ আমরা জান্নাতের বিয়ে করা সাথে দিলাম। জামাই কি আসলে কোন মানুষ নাকি জ্বিন। 🥺


 জান্নাতের মামা ও বাবার কথায় জান্নাতের মা এক দৌড়ে রুমে গেলেন, আর জানালার ফাঁক দিয়ে জান্নাতের রুমের দিকে তাকিয়ে শান্তির নিঃশ্বাস ফেলে বলেন উঠলেন। 


জান্নাতের মা - ওই জান্নাতের বাপ, কই আমাদের জামাই তো রুমেই আছে ঘুমাচ্ছে। তোমরা দুজন কাকে দেখছো। 


কিহহহ জামাই রুমে ঘুমাচ্ছে। বলে উঠলো জান্নাতের বাবা ও মামা। 


 জান্নাতের মায়ের কথায় তাঁরা দুজনে গিয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখলেন আরে ঠিকি তো জান্নাত ও জামাই তো রুমে আছে তাহলে আমরা কাকে দেখলাম। কার পিছন পিছন বাঁশ ঝাড়ে গেলাম। না আমাদের তো এতবড় ভুল হতে পারেনা।


জান্নাতের বর রুমে ঘুমাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে নিজের চোখকে যেনো বিশ্বাস করতে পারছেনা। 


এদিকে জান্নাতের মামা ও বাবাকে চিন্তিত দেখে জান্নাতের মা বললেন৷ চিন্তা করোনা তোমরা মনে হয় ভুল দেখছো, আসো রুমে আসো শুয়ে পড়ো কাল সকালে এসব নিয়ে ভাবা জাবে কথা বলা জাবে। 


জান্নাতের মায়ের কথায় জান্নাতের মামা ও বাবা রুমে গিয়ে চিন্তায় চিন্তায় ঘুমিয়ে পড়লেন। 


তারপর। ____

Next____

Post a Comment

Previous Post Next Post