গল্পঃ- সিনিয়র ফাজিল মেয়ে... 

পর্বঃ ১৪


লেখকঃ- Md Monir Uddin Shisir


আমি গিয়ে দেখি মা রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে,কয়েক জন লোক মাকে তুলেছে গাড়িতে আমি মা বলে চিৎকার দিলাম,তখন লোকগুলো আমার কাছে এসে আমাকে ধরলো,এরপর জানি না কী হলো,যখন জ্ঞান ফিরলো দেখলাম আমি হাসপাতালে একটা লোক এসে বললো


লোকঃ- আপনি কেমন আছেন


শিশিরঃ- আমার মা কোথায়


লোকঃ- ওনি ভিতরে


একটু পর ডাক্তার বাহিরে আসলো


শিশিরঃ- ডাক্তার আমার মা


ডাক্তারঃ- আপনার মায়ের অবস্থা খুব খারাপ, এখুনি অপারেশন করতে হবে, আপনি এখুনি এক লক্ষ্য টাকা জমা করে দেন


ডাক্তারের কথা শুনে আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেলে,আমি এতো টাকা কোথায় পাবো কে দিবে আমাকে এতো


শিশিরঃ- ডাক্তার আপনি অপারেশন ব্যবস্থা করুন আমি টাকা নিয়ে আসতেছি


ডাক্তারঃ- ওকে,কিন্তু তাড়াতাড়ি 


এরপর আমি রিয়াদকে ফোন দিয়ে তাকে সব বললাম,রিয়াদ তাড়াতাড়ি আমার কাছ আসতেছে এমন সময় নিলা তাকে বললো


নিলাঃ- ঐ এভাবে দৌড়ে কোথায় যাচ্ছিস,আর শিশির কোথায়


রিয়াদঃ- শিশিরের মা এক্সিডেন করেছে,ডাক্তার বলেছ অপারেশন করতে এক লক্ষ্য টাকা লাগবে


নিলাঃ- চল,আমিও যাবো তোর সাথে 


এরপর দুজনেই হাসপাতালে আমার কাছে এলো


শিশিরঃ- আমি এখন কী করবো রিয়াদ


নিলাঃ- শিশির তুমি যদি চাও আমি তোমার মায়ের চিকিৎসার সব খরচ বহন করবো,শুধু অপারেশন কেন,আরও যা করতে হবে সব খরচ আমার, কিন্তু একটা শর্ত


শিশিরঃ- বলে আপু কী শর্ত আমার মাকে বাঁচাতে আমি জীবন দিতেও রাজি


নিলাঃ- আরে না, তুই জীবন দিলে আমার কী হবে


শিশিরঃ- তাহলে বলো,কী করতে হবে


নিলাঃ- আমাকে বিয়ে করতে হবে


নিলা আপুর কথাটা শুনে মনে হলো আকাশ ভেঙে পড়লো


শিশিরঃ- আমি রাজি 


আমিও রাজি হয়ে গেলাম,কেননা মাকে বাচাতে আমি সব কিছু করতে পারি


নিলাঃ- শুধু বিয়ে করলে তো হবে না,তোকে তোর মায়ের মাথায় হাত রেখে কসম কাটতে হবে যে,তুই আমার সব কথা শুনবি,এবং আমাকে স্ত্রীর সব অধিকার দিবি


শিশিরঃ- আমি রাজি


রিয়াদঃ- ভেবে বলছিস তো


শিশিরঃ- এতো ভাবতে পারছি না,আমার মা....


নিলাঃ- ওকে


একটু পর নিলা কাকে যেন ফোন করলো,এরপর ডাক্তার এসে মায়ের অপারেশনের কাজ শুরু করেছে,প্রায় এক ঘন্টা পর ডাক্তার বের হয়ে আসলো


শিশিরঃ- ডাক্তার আমার মা


ডাক্তারঃ- আপনার মায়ের অবস্থা খুব বেশি ভালো না,প্রচুর রক্ত গেছে ওনার শরীর থেকে, তাই এখুনি ওনাকে রক্ত দিতে হবে, O+ গ্রুপ


শিশিরঃ- কিন্তু আমার তো A+


নিলাঃ- আমার রক্ত O+,আমি রক্ত দিবো 


ডাক্তারঃ- তাহলে তাড়াতাড়ি আসুন


নিলা রক্ত দিয়ে আমার মাকে বাঁচিয়েছে,তাই নিলার প্রতি ভালোবাসাটাও বেড়ে গেলো


মায়ের সুস্থ হতে ১৫ দিন সময় লেগেছে,এই ১৫ দিন নিলা মায়ের সব সেবাযত্ন করেছে, আজ মাকে নিয়ে বাসায় চলে গেলাম 


মাঃ- কে তুমি মা (নিলাকে উদ্দেশ্য করে)


নিলাঃ- ধরে নিন,আপনার মেয়ে


মাঃ- সত্যি, তুমি আমার মেয়ে


নিলাঃ- হ্যা মা,শুধু আপনি আপনার ছেলেকে বলে দিন আমাকে বিয়ে করতে,যেন আমি আপনার মেয়ে হয়ে সারাজীবন থাকতে পারি


মাঃ- কিন্তু মা,তোমার বাবা মা কী এই গরীবের ঘরে তোমাকে তুলে দিবে


নিলাঃ- আমার বাবা মা, সব জানে, শুধু আপনি রাজি হলে হবে


মাঃ- ঠিকআছে মা,আমি রাজি কিন্তু 


নিলাঃ- কিন্তু কী মা


মাঃ- শিশির 


নিলাঃ- শিশির রাজি,সে আপনার উত্তরের অপেক্ষায় আছে


মাঃ- তাহলে আমিও রাজি


কিছুদিন পর আমাদের বিয়েটা হলে গেলো...


নিলা বাসর ঘরে বসে আছে,আমি আস্তে আস্তে ঘরে ঢুকলাম,নিলা এসে আমাকে সালাম করলো


এরপর দুজনেই নামাজ আদায় করলাম,নিলা বিছানায় বসে আছে,আমি গিয়ে নিলার পাশে বসলাম,আর ঘোমটা সারিয়ে দেখলাম,নিলাকে আজ বউ সাজে লাল বেনারসিতে লাল পরীর মতো লাগছে


নিলাঃ- তুমি রাখ করেছো বুঝি


শিশিরঃ- কেন


নিলাঃ- তোমাকে জোর করে বিয়ে করতে বাধ্য করেছি তাই


শিশিরঃ- না (মুচকি হেঁসে) 


নিলাঃ- সত্যি তুমি আমাকে ভালোবাসো


শিশিরঃ-..... 


নিলাঃ- চুপ করে আছো কেন


শিশিরঃ- জানি না


নিলাঃ- জানতে হবে না,এখন এদিকে এসো


শিশিরঃ- কোথায় 


নিলাঃ- আমায় বুকে নাও


এরপর নিলাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কপাল একটা ভালোবাসার পশর একে দিলাম


নিলাঃ- আমাকে ছাঁদে নিয়ে যাবে


শিশিরঃ- চলো


নিলাঃ- আমাকে কোলে নাও


এরপর নিলাকে কোলে নিয়ে ছাঁদে যেতে লাগলাম.. 


চলবে...


বিঃদ্রঃ- ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন

Post a Comment

Previous Post Next Post