পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-


 পার্টঃ-১১©১২ এক সাথে


----রাফিঃ- আর নীলা শোন। যদি কেউ কি জিজ্ঞেস করে তাহলে বলবি আমি ঝুমুকে খাওয়াচ্ছি। ঠিক আছে?

-----নীলাঃ---( আশ্চর্য হয়েও কিছু বললাম না)--okh vaiya.


3rd person:- নীলা চলে যাবার পরে রাফি খাবার এর প্লেট হাতে নিয়ে ভাত মাখাচ্ছে। ঝুমুর এর মুখের সামনে এক লোকমা ধরলো।


-----রাফিঃ- নে হা কর। 

-----ঝুমুঃ- হঠাৎ করে আমার জন্য এতো দরদ উতলে পরলো কেন?

-----রাফিঃ- আমার জন্য যেহেতু তুই অসুস্থ হয়েছিস। সেহেতু আমাকেই তো সুস্থ করে তুলতে হবে। তাই নয় কি?

-----ঝুমুঃ- ওহহ কর্তব্য পালন করছেন?? কিন্তু আমি তো কাউকে দায়ি করিনি। আমি মরে গেলেই বা কার কি??-( অভিমানি কন্ঠে) 

-----রাফিঃ- আর একটা extra কথা বললে একদম থাপ্পড় মেরে দাত ফেলে দিবো,, বলদ কোথা কার। একদম চুপ চাপ খেয়ে নিবি বুজলি?--(রাগি কন্ঠে) 


--3rd person:- ঝুমুর রাফিকে বরাবরই সব সময় ভয় পায়। তাই তো শত অভিমান থাকা সত্বেও একদম চুপচাপ খেতে লাগলো। কেমন একটা ভালো লাগা কাজ করছে ঝুমুর এর মধ্যে। কিন্তু সেদিনের রাফির করা অপমানের কথা মনে পড়তেই সেই ভালো লাগাটা উড়ে গেলো। খাবার খাওয়ানোর পরে রাফি ওকে ওষধ খাইয়ে দিলো। সাথে একটা ঘুমের ইনজেকশন ও দিয়ে দিলো। আস্তে আস্তে ঝুমুর ঘুমিয়ে গেলো। রাফি আস্তে করে ঝুমুর এর কপালে একটা চুমু দিয়ে কাথাটা ওর গায়ে জরিয়ে দিলো। রাফি ঝুমুর এর ঘরটা খেয়াল করে নাই আগে। তাই সে চারপাশটা ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো। রুমটা খু্ব সুন্দর করে পরিপাটি করে সাজানো। একদিকে বুক সেলাফ এ খুব সুন্দর করে বই গুলা তাকে সাজিয়ে রাখা। ওয়্যারড্রয়ার এর উপর কয়েকটি সো পিস খুব সুন্দর করে সাজিয়ে রাখা। খাটের বিছানার পাসে সেন্টার টেবিল রাখা আর তাতে ঝুমুর এর হাস্যজ্বল একটা ছবি রাখা। তারপাসে রাফির দেয়া গিফট গুলা সাজিয়ে রাখা৷ দেয়ালে ফ্যামিলি পিক লাগলো। বেশির ভাগ পিক ঝুমুর আর রাফির সাথে তোলা। অন্যান্য আসবাবপত্র গুলা যথা স্থানে সুন্দর করে রাখা।


-----রাফিঃ- দেখছি বেশির ভাগ আমার দেয়া জিনিস গুলা দিয়েই ওর রুমটা সাজানো। Hmm osam.

 

3rd person:- হঠাৎ করে রাফির ঝুমুর এর পড়ার টেবিলে দিকে নজর গেলো। কয়েটা বই খাতা পরিপাটি করে সাজানো। পাসে একটা ফুলদানি। ও একটা কলম দানি। একটা কালো রং এর অ্যাপেল কোম্পানির ল্যাপটপ রাখা। আর এক পাসে খুব সুন্দর একটা ডায়রি রাখা। রাফি এগিয়ে গিয়ে ডায়রিটা উল্টো পাল্টে দেখতে লাগলো। ডায়রির প্রথমে বড় করে লেখা।


✔Don't touch it without my permission,,,,, please.✔


( আমার অনুমতি ছাড়া এটায় হাত দিবেন না দয়া করে)


-----রাফিঃ--(লেখাটি পরে হেসে দিলাম)---নিষিদ্ধ জিনিসের প্রতি আর্কষন বেশি থাকে রে গাধি।


3rd.person:- উপরের লেখাটি দেখে রাফির মনে কোতুহল জাগলো যে ভিতরে কি লেখা আছে ডায়রির। সে দেরি না করে ডায়রির প্রথম পাতাটা খুললো। সেখানে লেখা--


♠আমার মনের যত অব্যক্ত কথা♠

♠না বলা সব কথাগুলা তোমাকে ঘিরে প্রিয়তম-----R♠


3rd person:- লেখাটি দেখে রাফি অবাগ হলো যে লেখাটির সাথে তার নামের অধ্যাক্ষর লেখা।


-----রাফিঃ- তারমানে ডায়রিটা আমাকে নিয়ে লেখা।--(বিরবির করে)

( প্রথম পৃষ্ঠা থেকে ২ পৃষ্ঠা উলটালাম)


 ♥ডায়রির লেখা♥


♠সত্যি বলতে ভালোবাসা কি তা আমি জানি না। জানতে চাই না তা নয়। কোনোদিন কোনো ছেলেকে দেখে মনের মাঝে ভালো লাগা কোনো feelings সৃষ্টি হয় নাই শুধু মাএ একজনকে ছাড়া। যাকে দেখলে আমার দুনিয়াটা উলোট পালোট হয়ে যায়। যার কথা শুনলে আমি শিহরিত হয়ে যাই। যার কথা চিন্তা করলে সমস্ত ভালো লাগা এসে আমাকে ঘিরে ধরে। সে যে তুমি। আমার প্রিয়তম। আমার সব কিছু যে তুমি।---রাফি♠


3rd person:- আরো কয়েক পৃষ্ঠা লেখা পড়লো রাফি। রাফির মুখে হাসি লেগেই আছে। তার কেন জানি খুব ভালো লাগছে ডায়রিটা পড়তে। সে আরেকটি পৃষ্ঠায় গেলো। সেখানে লেখা---


♠ জানো তোমার প্রতি মাঝে।মাঝে চাপা অভিমান কাজ করে। কারন তোমার জন্য আমার প্রতিটা রাত কেদে কেদে কাটাতে হয়। খুব ভালোবাসি যে তোমায়। কিন্তু তুমি তো আমাকে সহ্যই করতে পারো না। খুব ঘৃনা করো আমায় তুমি। তাই তো লন্ডনে যাবার পরে ৫টি বছরে একটি বারও খোজ নাও নাই আমার। কিন্তু অন্য সবার সাথে দিব্যি কথা বলতে। খুব কষ্ট হয় আমার বিশ্বাস করো খুব কষ্ট হয়। সহ্য করতে পারি না তোমার করা আমার প্রতি অবহেলা। বিশ্বাস করবে কি না জানি না তোমার জন্য আমি প্রতিটা মুহুর্তে র্তীথের কাকের মতো অপেক্ষা করেছি কখন তুমি আসবে। তোমার প্রতি আমার যে টান, আমার যে ভালোবাসা সেটা কোনোদিনও তীল পরিমান কমবে না।

এমনকি মৃত্যুর পর ও না। তোমাকে ভালোবাসা যে আমার নেশা হয়ে গিয়েছে এ নেশা যে আমি কখনো কাটাতে পারবো না। তোমার সাথে আমার এ দূরত্ব তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা একটুকুও কমে নাই বরং আরো বেড়েছে। অনেক ভালোবাসি তোমার। তোমার আমাকে তুই বলে ডাকাটা অনেক মিস করি। কেনজানি না তোমার সাথে অন্য কোনো মেয়েকে আমার সহ্য হয় না। খুব কষ্ট হয় যখন দেখি তোমার সাথে অন্য একটা মেয়ে ঘসাঘসি করছে। তখন বেচে থাকার ইচ্ছেটাই আপনা আপনি মরে যায়। 


 ♦অপর পৃষ্ঠা♦


♠তুমি হয় তো আমাকে ভালোবাসো না। কারন তুমি আমার থেকে অনেক সুন্দর শিক্ষিত ভালো কোনো মেয়েকে ডিজার্ব করো। হয়তো আমি তোমার যোগ্য না। তাইতো তুমি আমাকে শতবার অপমান করে বুঝি দাও যে আমি তোমার মতো স্মার্ট ড্যাসিং ছেলের নখেরও যোগ্য নয়। ♠


 ♦অপর পৃষ্ঠা♦

♠প্রায় ৭ বছরের ও বেশি সময় ধরে তোমাকে আমি ভালোবাসি। কিন্তু মুখে প্রকাশ করিনি। তোমার প্রেমে অনেক আগেই ঘায়েল হয়ে বসে আছি। এখনো মনে পরে ছোটবেলায় যখন তুমি সবার থেকে বেশি আদর আমাকে করতে। সে যত্ন আমাকে নিয়ে তোমার পাগলামি গুলা এসবই তোমাকে আমার ভালোলাগার কারন। এই ভালোলাগা থেকেই ভালোবাসা তোমাকে ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারি না। আমার স্বপ্ন ও কল্পনাতে শুধু তুমিই বিরাজমান। একটা সেকেন্ড এর জন্যও তোমাকে ভুলতে পারি না♠


----রাফিঃ- ৭ বছর ধরে আমায় ও ভালোবাসে??O my god. সে সময় ভালোবাসা কি ও কি তা জানতো?--(চরম অবাগ হয়ে)


 ♦পরের পৃষ্ঠায় লেখা♦


♠আমি দিন দিন তোমার জন্য সাইকো হয়ে যাচ্ছি ♠


3rd person:- পুরা ডায়েরিটা রাফির পরা হয়ে গেছে শুধু মাএ ৩-৪ পৃষ্টা বাকি আছে। সেখানে লেখা--


♠ তুমি হয়তো আমাকে চাও না। আমাকে ভালোও বাসো না। আমি কোনোদিন তোমাকে জোর করবো না এ বিষয়ে। আমি একাই না হয় একতরফা ভালোবেসে যাবো। তোমাকে আমায় ভালোবাসতে হবে না। তবে এটা সত্যি যে আমি তোমাকে এত পরিমান ভালোবাসি যে তোমাকে অন্য কারো হতে দেখতে পারবো না। আমি যে এটা কোনোদিনও সহ্য করতে পারবো না। আর এটাও চাই না যে আমার জন্য কষ্ট হোক তোমার বা তোমার কাঙ্ক্ষিত ভালোবাসার মানুষকে তুমি হারিয়ে ফেলো। তাই যেদিন দেখবে তুমি অন্য কারো হয়ে গেছো সেদিনই আমি এই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে যাবো কথা দিলাম। তোমার জন্য আমিও মরতেও পারি। তবে পরকালে আমি আল্লাহর কাছে শুধু তোমাকে আমার জন্য ভিক্ষা চাইবো। আমার নামাজের প্রতিটা মোনাজাত এ যে শুধু তুমি আছো। ♠


( এর নিচে লেখা)


♠ভালোবাসি রাফি ভাই। খুব করে ভালোবাসি। আমার প্রতিটা নিশ্বাস যে শুধু তুমি জরিয়ে আছো রাফি ভাই। আমার মনের গহিনে যে তোমার নাম শুধু খোদাই করা। মরে যাবো তোমাকে ছাড়া। বিশ্বাস করো একটু বেছে থাকতে পারবো না তুমি হিনা। তুমি যে আমার জিবনের সব। আমার জিবনের সাধনা যে শুধু তুমি। সব শেষ একটা কথাই বলবো---

®I love you Rafi vaiya© I love you a lot©♠


3rd person:- সব টুকু পড়া শেষ করে ডায়রিটা বন্ধ করে রাফি একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে যেখানে ডায়রিটা ছিলো সেখানে রেখে দিলো। শেষের পৃষ্ঠার লেখা গুলা পরে রাফির মাথাটা কেমন জানি ঝিমঝিম করছে। এতোটা ভালো যে কেউ কাউকে বাসতে পারে সেটা তার কল্পনাতীত। বিছানার দিকে মুখ করে তাকাতেই দেখে সেখানে ঝুমুর শান্ত হয়ে ঘুমিয়ে আছে। কতটা মায়া যে ওর মুখের মধ্যে মিশে আছে। মনে হচ্ছে যে পুরা একটা ঘুমপরি। রাফি আস্তে করে গিয়ে ঝুমুর বিছানার পাসে বসলো। ঝুমুর এর এক হাত রাফির বুকে নিয়ে ঠেকালো।


-----রাফিঃ- এতোদিন যানতাম যে ছেলেরা ভালোবাসা নিয়ে পাগলামি করে। কিন্তু এখন তো দেখি তার পুরাই উল্টো। 


( ঝুমুর এর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ঝুমুর এর হাতটা বুক থেকে তুলে একটা চুমু দিলো)


-----রাফিঃ- আমিও যে তোকে খুব ভালোবাসি। এর আগে সেটা বুঝিনি।--(মনে মনে)


3rd person:- এমনই সময় রাফির দাদি রুমে প্রবেশ করে যেটা রাখি খেয়াল করে নি। রাফি একধ্যানে ঝুমুর এর দিকে তাকিয়ে ওর হাতটা ধরে বসে আছে। রাফির দাদি সেটা খেয়াল করলেন সে এসে আলতো করে রাফির কাধে হাত রাখলেন। রাফি তো ভয় পেয়ে চমকে পিছনে ঘুরে তাকালো। রাফি তাকাতেই সে একটা মুচকি হাসি দিলো।


-----রাফিঃ-আরে দাদি তুমি কখন এলে??--(অবাগ হয়ে আর তার সাথে ঝুমুর হাতটা ছেড়ে দিয়েও)


চলবে......কি???


পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-


 পার্টঃ-১২ 🥰


🥀

3rd person:- এমনই সময় রাফির দাদি রুমে প্রবেশ করে যেটা রাখি খেয়াল করে নি। রাফি একধ্যানে ঝুমুর এর দিকে তাকিয়ে ওর হাতটা ধরে বসে আছে। রাফির দাদি সেটা খেয়াল করলেন সে এসে আলতো করে রাফির কাধে হাত রাখলেন। রাফি তো ভয় পেয়ে চমকে পিছনে ঘুরে তাকালো। রাফি তাকাতেই সে একটা মুচকি হাসি দিলো।


-----রাফিঃ-আরে দাদি তুমি কখন এলে??--(অবাগ হয়ে আর তার সাথে ঝুমুর হাতটা ছেড়ে দিয়েও) 

-----দাদিঃ- এই তো এ মাএ আসলাম। তা ঝুমু ঘুমিয়ে পরেছে??

-----রাফিঃ- হ্যা দাদি অনেক আগেই ঘুমিয়ে পরেছে।

-----দাদিঃ- ওহহহ--(কিছুক্ষণ ভেবে)---দাদুভাই ভালোবাসিস ঝুমুরকে তাই না??

-----রাফিঃ-( দাদির কথা শুনে ঝট করে অবাগ হয়ে তার দিকে তাকালাম। কি ব্যাপার দাদি আমার মনের কথা বুঝলো ক্যামতে)--না মানে আসলে দাদি হ্যা।

-----দাদিঃ- মানে মানে করতে হবে না। সত্যিটা বল তো দেখি।

-( রাফি উঠে গিয়ে ওর দাদিকে জরিয়ে ধরলো)


-----রাফিঃ- তোমার সাথে তো আমি আমার সব কিছু সেয়ার করি তাই নয় কি??

-----দাদিঃ- হ্যা হ্যা এই তো সেয়ার করার নমুনা। তলে তলে এতোদুর এগিয়ে গেছো আমায় কিছু বললা না।--(মন খারাপ করার ভান করে)

-----রাফিঃ- রাগ করে না দাদি,,আমার sweet heart,, তুমি রাগলে আমায় কে বুজবে বলো?--(পিছন থেকে দাদিকে জরিয়ে ধরে)

-----দাদিঃ- তাহলে সত্যি কথাটা বল আমায়। তোর মুখ থেকেই শুনি।

-----রাফিঃ- হ্যা আমি ঝুমুরকে ভালোবাসি এটা সত্যি। --(নিচু স্বরে)

-----দাদিঃ- বাহহ তা এটা কি ঝৃমুর জানে??

-----রাফিঃ- না আমি যে ওকে ভালোবাসি সেটা ও জানে না কিন্তু ও যে আমায় ভালোবাসে সে কথা আমি জানি।

-----দাদিঃ- কি করে?? তোকে কি ও বলেছে না কি??-(ভ্রু কুচকে)


3rd person:-( তারপরে রাফি প্রথম থেকে একে একে সব কিছু বলতে শুরু করলো। কোনো কিছু বাদ দিলো না। আর ওর দাদি সব কিছু মন দিয়ে শুনছে)


-----রাফিঃ- দাদি জানো তোমার নাতনি না কি আমায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে ভালোবাসে। ওর বয়সই বা কত ১৭-১৮ হবে। ৭ বছর আগে ভালোবাসা কি সেটা কি ও বুজতো বলো??--(হেসে)

-----দাদিঃ- যাই হোক দাদু ভাই তুমি কিন্তু আমার দিদা ভাইকে অনেক কষ্ট দিয়েছো। সেটা কিন্তু একদম ঠিক নয়।--(গম্ভীর কন্ঠে) 

-----রাফিঃ- দাদি মানছি আমি ওর সাথে ভুল করেছি। জানি না ও মাফ করবে কি না। তাই বলে তুমি আমাকে ভুল বুঝো না। তুমি তো সব কিছু শুনলে---বলো।--(আহ্লাদী সুরে)

-----দাদিঃ- তা যাই হোক না কেন আমার দিদা ভাইকে তুই নিজ দায়িত্বে সুস্থ করে তুলবি। আবার আমার দিদার মুখে হাসি ফুটিয়ে তুলবি। আর হ্যা এবার কিন্তু তোর মনের কথাটা ওকে বলে দিস।

-----রাফিঃ- ওসব তুমি চিন্তা করো না দাদি। ওসব আমি দেখে নিবো। আর হ্যা খুব শীঘ্রই ওকে আমার মনের কথা বলবো। আচ্ছা দাদি একটা কথা বলো তো--- আব্বু দাদু মেঝো চাচু বাকি সবাই কি আমাদের সম্পর্কটা মেনে নিবে?? 

-----দাদিঃ- কেন মেনে নিবে না??

-----রাফিঃ- না মানে ঝুমুর আর আমি তো চাচাতো ভাই বোন তাই না?? আসলে মানে আমি বুঝাতে চাচ্ছিলাম আরকি??----( আমতা আমতা করে)

-----দাদিঃ- তুই কি বুঝাতে চেয়েছিস আমি তা বুজতে পারছি। আচ্ছা দেখ আমি আর তোর দাদু কিন্তু আপন খালাতো ভাই বোন তাই বলে কি আমাদের বিয়ে হয় নাই?? তাও আবার তোর দাদু আমায় পছন্দ করে বিয়ে করেছে। তাহলে তোদের সম্পর্ক কেন মেনে নিবে না?? এরমম রিলেশন তো প্রায়ই হয়ে থাকে।

-----রাফিঃ- তুমি এতো সিওর হয়ে কি করে বলচো বলো তো??

-----দাদিঃ- কারন তোর আর ঝুমুর এর বিয়ে অনেক আগেই পাকা করে রাখা হয়েছে। ---(হেসে)

-----রাফিঃ- এ্যা কি বলো?? এসব?

---(বিষম খেয়ে)

-----দাদিঃ- হ্যা দাদু ভাই। তুই তো জানিস মিলির জন্য অনেক ভালো একটা সম্বন্ধ এসেছে তো যেদিন মিলির অ্যাঙ্গেজম্যান্ট হবে সেদিনই ঝুমুরের সাথে তোর আকদ করে দেয়া হবে--(রাফির মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে)


-----রাফিঃ- O My God.. দাদি এতো বড় একটা খবর তুমি আমাকে আগে কেন বলো নি??--(খুশিতে আত্মহারা হয়ে)

-----দাদিঃ- হয়েছে এখন এতো উত্তেজিত হস না। আগে ঝুমুরকে তুই সুস্থ করে তুল দাদু ভাই। আর হ্যা দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেছে তুই এখনো খাস নাই কেন?? তাড়াতাড়ি নিচে যা গিয়ে খেয়ে আয়।

-----রাফিঃ- দাদি যে খুশির খবরটা তুমি দিয়েছো তাতে আমার পেট ভরে গেচে। Finally ঝুমু আমার হবে। I am so happy দাদি---(দাদিকে শক্ত করে জরিয়ে ধরে)

-----দাদিঃ- হয়েছে হয়েছে এখন তুই নিচে যা আর নীলাকে একটু বল এখানে আসতে। যা যা--(জোর করে পাঠিয়ে দিয়ে)


3rd person:- রাফি ঝুমুর এর দিকে এক নজর তাকিয়ে নিচে চলে গেলো। নিচে গিয়ে নীলাকে পাঠিয়ে দিলো ঝুমুর এর রুমে। আর রাফি খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে রেডি হয়ে অফিসের উদ্দেশ্য বের হয়ে গেলো। খু্ব নামি দামি একটা কোম্পানি ওদের। এ কোম্পানির মালিক রাফির দাদা আশফাক চৌধুরি। অনেক পরিশ্রম এর পরে কোম্পানিটা আজ এ পর্যায়ে এসেছে। এখন রাফির বাবা সহ ওর বাকি চাচারা আর তুষার সব দেখা শোনা করছে আর আজকে থেকে রাফিও এ কোম্পানির CEO পদে জয়েন করবে। গতকাল ঝুমুর এর জন্য অফিসে যেতে পারিনি রাফি। এমনকি আজকে সকালেও তাই বিকাল বেলা গেলো। রাফি আজ পুরাই ফর্মাল টাইপের হয়ে অফিসে গেছে। সাদা শার্টের সাথে কালো কোর্ট আর সাদা প্যান্ট। চুল গুলা জেল দিয়ে একদিকে সেট করা। একদম অফিস গেটাপ। তখনই ইশান কল দিলো একদিকে গাড়ি ড্রাইভ নিজে করছে অন্যদিকে ইশান এর সাথে কথা বলছে। ওর সাথে কথা বলতে বলতে অফিসে পৌছে গেলো। তারপরে গাড়িটা সঠিক জায়গায় পার্ক করে গাড়ি থেকে বের হয়ে দরজা নক করে দিলো। রাফির আসার অপেক্ষায় এতোক্ষণ বাহিরে দাড়িয়ে ছিলেন অফিসের ম্যানেজার আর অফিসের কিছু স্টাফ। রাফি তাদের কাছে যেতেই তারা ওর সাথে হ্যান্ডসেফ করে অভ্যর্থনা জানিয়ে ভিতরে নিয়ে গেলো। ভিতরে অফিসের বাকি সব স্টাফ রা রাফিকে ফুল দিয়ে স্বাগতম জানালো। আর রাফি সবার সাথে পরিচিত হয়ে নিলো। অফিসের ম্যানেজার সবাইকে জানিয়ে দিলো যে রাফি চৌধুরী আজ থেকে এ অফিসে CEO হয়ে জয়েন করেছে। অফিসের বেশির ভাগ মেয়েরাই রাফি দেখে ফিদা কিন্তু রাফির ওদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই। কারন তার পুরা হৃদয় জুড়ে যে আছে শুধু ঝুমু। ম্যানেজার রাফিকে ওর ক্যাবিনে নিয়ে গেলো। রাফির রুমটা খুব সুন্দর করে গোছালো আর পরিষ্কার করা। ওদের অফিসের ১০ তলা থেকে শহরের অনেক দুর অবদি দেখা যায়। রাফির রুমও ১০ তলার এক খোলা সাইটে। তুষার এর ক্যাবিন রাফির ক্যাবিনের পাসে। তুষার এ অফিসের একজন MD. আজকে তুষার অফিসে আসে নাই। শুধু রাফি এসেছে। সে আগে থেকেই তুষার এর কাছ থেকে CEO এর কাজ সম্পর্কে ধারনা নিয়ে রেখেছে। আর রাফির ও কিছু অভিজ্ঞতা আজে এ বিষয়ে তাই ওকে আর ভিন্ন করে বুজিয়ে দিতে হলো না। রাফি ওর ক্যাবিনটা ঘুরে ঘুরে দেখে ম্যানেজার এর দিকে ঘুরে তাকালো।


-----রাফিঃ- খুব সুন্দর ক্যাবিন---I like it.


(ম্যানেজার একটা যুবক টাইপের ছেলেকে নিয়ে আসলো)


-----ম্যানেজারঃ- স্যার আজ থেকে এ আপনার PA,,আর এর নাম রিজু আহমেদ।


3rd.person:- ( ম্যানেজার রিজুকে রাফির সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে চলে গেলো। রিজু ছেলেটা অনেক ভালো। আর তার সাথে কাজেও অনেক ন্যায়পরায়ন,, অনেক experience আছে,,খুবই ভদ্র,। রিসেন্টলি যে ডিল গুলা হয়েছে সে সব গুলা রাফিকে খুব সুন্দর করে বুঝিয়ে বললো। ফাইল গুলাও এগিয়ে দিলো। রাফির ভাগে যে ডিল গুলা পড়েছে সেগুলা নিয়েও আলোচনা করলো। তারপরে রাফির অধিনে যারা কাজ করবে তাদের সাথে রিজু রাফির পরিচয় করিয়ে দিলো অফিসের নতুন CEO হিসেবে। সবার সাথে পরিচয় পর্ব শেষ করে রাফি তাদেরকে তার সাথে কাজ করতে হলে যে যে রুলস গুলা মেনে কাজ করতে হবে সে সম্পর্কে সবাইকে অবগত করলো। আজ প্রথম দিন তাই রিজুর সাথে আরো কিছুক্ষণ আলাপ করে অফিসেটা দেখে বাসার দিকে রওনা দিলো রাফি।


 ♠অপরদিকে♠


♠ঝুমুর এর ঘুম ভেঙেছে পানির পিপাসার জন্য। চোখ পিটপিট করে সে চারদিকে তাকালো। ঝুমুর দেখলো তার পাসে নীলা শুয়ে উল্টো দিকে ঘুরে ফোন টিপতাছে। ঝুমুর আস্তে করে উঠে বিছানায় বসলো। পাসে নীলা শব্দ পেয়ে ঝুমুর এর দিকে তাকালো। আর ব্যস্ত হয়ে বললো♠


-----নীলাঃ- ঝুমুর--কিছু কি লাগবে তোর??

-----ঝুমুঃ- আসলে গলাটা শুকিয়ে গেছে। পানি খাবো।


( পাসের টেবিল থেকে পানি এনে নীলা ঝুমুরের কাছে দিলো)


-----নীলাঃ- এই নে ধর।

-----ঝুমুঃ-(ঢকঢক করে সব পানি খেয়ে নিলাম)--Thanks.

-----নীলাঃ- দুর্বলতা কি একটু কমেছে ঝুমুর--(পাসে বসে কোমল কন্ঠে) 

-----ঝুমুঃ- হুমম একটু কমেছে। কিন্তু আমার কিছুই ভালো লাগছে না।

-----নীলাঃ-ওহহ আচ্ছা। তুই আগে ড্রেসটা চেঞ্জ করে নে তার পরে যা ইচ্ছে হয় তোর তাই করিস ওকে?

-----ঝুমুঃ- হ্যা আগে হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হতে হবে। আচ্ছা আব্বু আম্মু বড় আম্মু সবাই কোই?? কারো কোনো সাড়াশব্দ নাই যে?

-----নীলাঃ- ফ্যাক্টরিতে কি জানি একটা সমস্যা হয়েছে তাই তারা পাঁচ ভাই সেখানে গেছে। মেঝো চাচ্চু তো যেতেই চাইছিলেন না পরে আমি আর ভাইয়া বলছি টেনশন না করতে আমরা আছি তো এই বুঝিয়ে পাঠিয়েছি। আম্মুর আর মেঝো আম্মু তোর প্রিয় খাবার বানাতে ব্যস্ত। আর রাফি ভাইয়া অফিসে গেছে। বাকি কে কোথায় আছে জানি না।-(একদমে বলে দিলাম)

-----ঝুমুঃ- আমি শুধু জিজ্ঞেস করেছি আব্বু আম্মু আর বড় আম্মুর কথা। আর তুই পুরা চোদ্দগোষ্ঠীর খবর দিলি। আসলেই তুই একটা মাথা মোটা বলদ।--(মাথা ঝাকিয়ে)

-----নীলাঃ- আমি মাথা মোটা বলদ হলে তুই আমার পেয়ারি বোন বলদি জাম্বুরা।-(( হেসে))

-----ঝুমুঃ- What do you mean??বলদি জাম্বুরা??

-----নীলাঃ- কিছু না। তুই চল আগে ফ্রেস হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করবি।--(তারপরে ঝুমুকে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম)


চলবে......কি??

ভাবলাম আজ সব পর্ব দিবো কিন্তুু এক ফ্রেন্ড নিষেধ করলো তাই দিলাম নাহ। 

Post a Comment

Previous Post Next Post