পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-
পার্টঃ-১০
3rd person:- ফজরের আযানের কিছু সময পরে সবে মাএ ভোরের আলো ফুটতে শুরু করেছে। তখন ঝুমুর এর জ্ঞান ফিরলো । ঝুমুর এর কেবিনে রাতে নীলা আর ওর আম্মু ছিলো। ঝুমুর জ্ঞান ফিরতেই সাথে সাথে ডক্টরকে ইনফরম করা হলো। ডক্টর এসে ঝুমুরকে দেখতে লাগলো। ঝুমুর মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো তাই সে কথা বলতে পারছে না। ডক্টর চেকআপ করার পরে ঝুমুর এর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্কটা খুলে দিলেন। তারপরে তাকে জিজ্ঞেস করলো
-----ডক্টরঃ- তোমার এখন কেমন লাগছে?
-----ঝুমুঃ- নিজেকে খুব দুর্বল লাগছে। কিন্তু আমি হাসপাতালে কেন?? কি হয়েছে আমার--(ভাঙা কন্ঠে)
-----ডক্টরঃ- আসলে তোমার শরির প্রচন্ড দুর্বল থাকার কারনে তুমি মাথা ঘুরে পরে যাও তাই তোমাকে হাসপাতালে এডমিট করানো হয়।
-----ঝুমুঃ- কিন্তু আমি তো হাসপাতালে থাকতে একদম পছন্দ করি না। আমার একদম ভালো লাগে না। আমি বাসায় যাবো--(অস্থির হয়ে)
-----ডক্টরঃ- অস্থির হয়ো না মামনি তুমি এখন অনেক দুর্বল। তোমাকে কষ্ট করে হলেও একদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। কালকে সকালে না হয় তোমাকে ডিসচার্জ করে দেয়া হবে।
-----ঝুমুর আম্মুঃ- হ্যা রে মা। কালকে সকালেই তোকে বাসায় নিয়ে যাবো তোকে আর কষ্ট করে এখানে থাকতে হবে না।
-----ঝুমুঃ- আঁচ্ছা আম্মু,, আব্বু কোথায়?? আর ভাইয়াই বা কোথায়??
-----ঝুমুর আম্মুঃ- তোর আব্বু বাহিরে গেছে তোর জন্য খাবার আনতে তার সাথে তুষার ও গেছে। চলে আসবে হয়তো এখনই।
-----ঝুমুঃ- ওহহহ।
( কিছুক্ষণ পরে মি আলতাফ আর তুষার খাবার নিয়ে আসলো। খাবার এর প্যাকেটটা ঝুমুর এর আম্মুর হাতে দিলো)
-----তুষারঃ- এখন থেকে নিয়মিত খাবার খেতে হবে ঝুমু। খাবার নিয়ে তেড়িমেড়ি করলে চলবে না কিন্তু।
3rd person:- ( তারপরে ঝুমুরকে একটু হালকা বসিয়ে বালিশের সাথে হেলান দেয়াই খাবার খাওয়ানো হলো। অতঃপর ওষধ খাওয়ানো হলঁ। একটু পরে সকাল সকালই বাসার সবাই ঝুমুরকে দেখতে হাসপাতালে আসলো। ঝুমুর এর দাদা দাদি ও এসেছে। ঝুমুরকে তারা খু্ব ভালোবাসে তো তাই ওর দাদা দাদিও কালকে রাতে হাসপাতালে থাকতে চেয়েছিলঁ। কিন্তু তুষার এদের থাকতে দেয় নাই। কারন ওদের আর কষ্ট করার বয়স নাই। যদি ওনারা আবার অসুস্থ হয়ে পরে তাই। ঝুমুর এর দাদি এসে ওকে জরিয়ে ধরলো
-----দাদিঃ- এখন কেমন আছিস দাদু ভাই? তোর জন্য অনেক চিন্তায় ছিলাম।
-----ঝুমুরঃ- এখন একটু ভালো লাগছে। আর টেনশন করো না আমার জন্য তোমরা।
3rd person:- একে একে সবাই ঝুমুর এর সাথে দেখা করলো। শুদু মাএ রাফি বাদে। সবার দেখা করা হলো ডক্টর এসে ঝুমুরকে একটা ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে দিলো কারন ঝুমুর এর এখন পুরা বিস্রাম এর প্রয়োজন। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঝুমু ঘুমিয়ে গেলো। সবাই যখন রুম থেকে বের হয়ে বাহিরে বসে কথা বলচে তখন রাফি আড়ালে ঝুমুরের কেবিনে ডুকলো। আস্তে আস্তে গিয়ে ঝুমুর এর মাথার পাসে চেয়ার টেনে বসে ঝুমুর এর দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। এদেখার যেন কোনো শেষ নাই। শেষ হবেও না কোনোদিন।
-----রাফিঃ-ওকে দেখছি আর ভাবছি--মহান আল্লাহ যেন সব সৌন্দর্য ওর মায়ার ভিতরে ডুকিয়ে দিয়েছে। কি এমন আছে ওর ভিতরে যেটা আমাকে সর্বদা ওর কাছে টানে। সে যাই থাকুক না কেন আমার মনের রানী তো তোকেই বানাবো--( কপালে গভির ভাবে একটা চুমু দিয়ে)
3rd person:- ঝুমুর সজাগ থাকতে ইচ্ছে করেই রাফি ওর সামনে আসে নাই। কারন রাফি নিজেই অস্থির বোধ করছিলো। কিন্তু ঝুমুর এর খেয়াল সে ঠিকি রেখেছে। পরেরদিন সকালেই ঝুমুরকে ডিসচার্জ করে দেয়া হলো। ডক্টর বলেছিলো কমপক্ষে ২-৩ দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। কিন্তু ঝুমুর হাসপাতালে থাকতে মোটেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে না। তাই ঝুমুর এর আব্বু মি আলতাফ সাহেব ঝুমুর এর সব treatment এর ব্যবস্থা বাসাতেই করেছে। সব ফরমালিটি মেনে ঝুমুরকে বাসায় নিয়ে আসা হলো। তুষার ঝুমুরকে কোলে নিয়ে গিয়ে ওর বিছানায় বসিয়ে দিলো।
-----তুষারঃ- বোন আমার-- কিছু খাবি? বল আমায়--তোর ভাবিকে কিছু বানিয়ে আনতে বলবো??--(গালে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে)
-----ঝুমুঃ- না ভাইয়া আমি এখন কিছু খাবো না আমার খিদা নাই। খিদা লাগলে এমনিতেই চেয়ে নিবো।
( তখনই কোথা থেকে যেন ঝুমা এসে এক লাফ৷ ঝুমুর এর পাসে বসে গেলো)
-----ঝুমাঃ- মাম্মাম তুমি এতোদিন কোথায় ছিলে??
-----ঝৃমুঃ- আরে আমার কলিজা। তুমি কেমন আছো গো?--(কোলে নিয়ে)
-----ঝুমাঃ- একটুও ভালো নাই। তোমাকে খুব মিস করেছি।
-----ঝুমুঃ- ওরে আমার কলিজাটারে তাই বুঝি?? এই যে দেখো আমি চলে এসেছি তোমার কাছে আর কোথাও যাবো না। promise.----(জরিয়ে ধরে)
-----তুশারঃ- হায় আল্লাহ এতো আদর তো মেয়েটা আমি ওর বাপ হয়েও ওর থেকে পাই না। আচ্ছা আম্মু তুমি এখন তোমার মাম্মাম এর কাছ থেকে আমার কোলে আসো। তোমার মাম্মাম খুব অসুস্থ। ব্যাথা পাবে তো
-----ঝুমুঃ- থাক না ভাইয়া ও আমার কাছে।--(আরো কাছে নিয়ে)
( তখনই অর্না আসলো পিচ্চিটার খাবার নিয়ে)
-----অর্নাঃ- দেখো না ঝুমুর, ঝুমা তো কিছুই খাচ্ছে না তোমার হাতে খেতে খেতে এমন অভ্যাস হয়ে গিয়েছে যে এ দুইদিন তুমি বাড়িতে ছিলে না একটা দানা পানিও মুখে দেয় নাই ঝুমা। কালকে রাতে হাতে কোনা দুইচামচ খাবার খেয়েছি তাও আবার কাদিয়ে--(অভিযোগ কন্ঠে)
-----ঝুমুঃ- ঝুমা এসব যা শুনছি তা কি ঠিক? যদি না খাও তাহলে তো তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে।
-----ঝুমাঃ- আমি তোমার হাতে ছাড়া আর কারো হাতে খাবো না।
-----তুষারঃ- Relax আম্মু। এমন করে না আমার মা। না খেলে কি করে হবে বলো?
-----ঝুমুঃ- ভাবি কই ওর খাবারটা দাও তো আমি আমার কিউটিকে খাবার খাওয়াবো।
-----অর্নাঃ- এই নাও ওর খাবার বাটি। কিন্তু তোমার তো এখন রেষ্ট এর দরকার ঝুমু।
-----ঝুমুঃ- অসুবিধা নাই এখন আমি ঠিক আছি। আর ঝুমা এখন কিন্তু কোনো অজুহাত চলবে না খেতে হবে।
-----ঝুমাঃ- হুমম দাও।
( ঝুমু খাবার দিলো আর ঝুমা খেয়ে নিলো)
-----অর্নাঃ- দেখে মনে হচ্ছে ও আমার মেয়ে না ঝুমুর এর মেয়ে।--(হেসে)
-3rd person:-( ঝুমুর ঝুমাকে খাওয়াচ্ছে অর্না চলে গেলো রান্না ঘরে তুষার এর কি জানি কল আসায় বাহিরে চলে গেলো। আর অপর পাসে রাফি দরজার পাসে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ঝুমুর ঝুমাকে খাওয়ানো দেখচে)
-----রাফিঃ- যখন আমাদের বেবি হবে তখনও ও আমাদের বেবিকে এভাবে খাইয়ে দিবে--(মনে মনে)
3rd person:- রাফি আস্তে আস্তে ঝুমুর রুমে ডুকলো। কিন্তু সেটা ঝুমু দেখে নাই। ঝুমু ঝুমাকে নিয়ে ব্যাস্ত। ঝুমা ওর এই দুইদিনের জমিয়ে রাখা কথা বলছে। আর ঝুমু ওকে খাইয়ে দিচ্ছে আর হাসছে। খাওয়ানো প্রায় শেষের দিকে তখন রাফি গিয়ে ঝুমুর এর বিছানায় ওর মুখামুখি বসলো। ঝুমুর রাফিকে দেখে এক তন্দা তাকিয়ে রইলো।
-----রাফিঃ- কিরে এমন করে কি দেখিস?
( ঝুমু চোখ সরিয়ে নিলো। আর ঝুমা গিয়ে রাফির গলা জরিয়ে ধরলো)
-----ঝুমাঃ- ছোট আব্বু তুমি বলেছিলে আমার জন্য চকলেট নিয়ে আসবে। আমার চকলেট কোথায়??-(হাত পেতে)
-----রাফিঃ- এনেছি তো আম্মু। তোমার জন্য চকলেট আনবো না তা কি হয়?--(পকেট থেকে চকলেট বের করে দিয়ে)
-----ঝৃমাঃ- Thank you and love u ছোট আব্বু।
-----রাফিঃ- love u too আমার পিচ্চি জান।--(ঝুমাকে চুমু দিয়ে আর ঝুমুর দিকে আড়চোখে তাকিয়ে)
-----ঝুমুঃ- মামনি পানি খেয়ে নাও--(আচ্ছা উনি আমার রুমে আসলো। কেন? সহানুভূতি দেখাতে এসেছে?? উনি নিজেই তো বলেছিলে যে আমার মুখ উনি কখনো দেখতে চায় না)--মনে মনে।
-----ঝুমাঃ- আমি আম্মুর কাছে যাবো।
-----রাফিঃ- আচ্ছা তোমার আম্মু রান্না ঘরে আছে যাও।
( ঝুমা দৌড়ে রান্না ঘরে চলে গেলো। আর এদিকে ঝুমুর তো অসহ্য লাগছে। রাফি ওর আরো কাছে এসে বসেছে। হঠাৎ করে রাফি বললো)
-----রাফিঃ- এরকম একটা কিউট ব্যাবি যদি আমার থাকতো তাহলে কতই না ভকলো হতো।
-----ঝুমুঃ- আশ্চর্যজনক ভাবে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি কিন্তু কিছু বলছি না।।
-----রাফিঃ- I wise আমারও এমন একটা পরি থাকবে যে আমাকে আব্বু আব্বু বলে ডাকবে। ইশশ কবে যে সেদিন আসবে।--(আর তোকে আম্মু বলে ডাকবে--ঝুমুকে উদ্দেশ্য করে মনে মনে)
-----ঝুমুঃ- তাহলে বিয়ে করেই ফেলুন না- ভালোই হবে। আমারও দুনিয়ার পার্ট চুকিয়ে ফেলতে সুবিধা হবে।--(ঝাজালো কন্ঠে)
-----রাফিঃ-( ওর কথাটা শুনে বুকটা ধক করে উঠলো। আমি ওর মুখটা চেপে ধরলাম)---হুশশশ এমন কথা যদি আর কখনো বলিস তাহলে একদম জানে মেরে ফেলবো।
-----ঝুমুঃ- মেরে তো ফেলেছো অনেক আগেই। এখন আবার কি মারবে। আমি আর নিজের মধ্যে বেচে নাই। সেই কবে মরে গেছি।
-----রাফিঃ- (ঝুমুর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। ওর চোখ বলে দিচ্ছে যে ঝুমু ভালো নাই।)-- হয়েছে আর পাকনামো করতে হবে না। দুপুর হয়ে গেছে খাবার খেয়ে ওষধ খেতে হবে।---নীলা ওই নীলা--(চিল্লিয়ে)
( নীলা রাফি ডাকচে শুনে দৌড়ে ঝুমুর এর রুমে এলো)
-----নীলাঃ- হ্যা ভাইয়া বলো।।
-----রাফিঃ- ঝুমুর এর জন্য খাবার নিয়ে আয়। খাবার খেয়ে ওষধ খেতে হবে ওর।
-----নীলাঃ- ওকে আনছি ওয়েট।
( একটু পরে নীলা খাবার নিয়ে এলো)
-----নীলাঃ- এই নাও ভাইয়া।।
-----রাফিঃ- আচ্ছা এখানে রেখে তুই যা। আর যদি কেউ কি জিজ্ঞেস করে তাহলে বলবি আমি ঝুমুকে খাওয়াচ্ছি। ঠিক আছে?
-----নীলাঃ---( আশ্চর্য হয়েও কিছু বললাম না)--okh vaiya.
Happy🥀 birthday Niha💝
Happy New year
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো আমার পক্ষ থেকে
চলবে👉
Post a Comment