পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ

পার্টঃ-১৩


-----নীলাঃ- আমি মাথা মোটা বলদ হলে তুই আমার পেয়ারি বোন বলদি জাম্বুরা।-(( হেসে))

-----ঝুমুঃ- What do you mean??বলদি জাম্বুরা??

-----নীলাঃ- কিছু না। তুই চল আগে ফ্রেস হয়ে ড্রেস চেঞ্জ করবি।--(তারপরে ঝুমুকে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে গেলাম)---ঝুমু শোন একদম ওয়াশরুমের দরজা নক করবি না আর কাপর রুমে এসে চেঞ্জ করবি। আর ঠান্ডা পানি লাগানো একদম নিষেধ। So mind it. 

-----ঝুমুঃ- আচ্ছা ম্যাম--(মাথায় চাটি মেরে)-- যা তুই এখন।

-----নীলাঃ- আহহ,,কিছু লাগলে আমাকে ডাক দিস আমি তোর রুমেই আছি।

-----ঝুমুঃ- ওকে---


3rd person:-তারপরে ঝুমু হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে এসে রুমে ড্রেস চেঞ্জ করে নিলো। ওর শরির একটু দুর্বল লাগছে আর সাথে মাথাও ঘুরছে । তবুও এক জায়গায় থাকতে খুবই বিরক্ত লাগছে ঝুমুর এর তাই নীলা ঝুমুকে নিয়ে ওর বারান্দায় গেলো। ঝুমুর আস্তে করে বারান্দার রেলিং ধরে দাড়ালো। বাহিরে হালকা বাতাস বইছে। ঝুমুর চোখ বন্ধ করে বাতাস অনুভব করছে।

অনেকটা হালকা লাগতাছে ওর। আর নীলা তো ওর কানের পাসে বসে ঘ্যানর ঘ্যানর করতেই আছে। কলেজে কি হলো না হলো,ইত্যাদি ইত্যাদি বলছে। আর ঝুমুর শুধু প্রতি উওরে হ্যা না বলছে। হঠাৎ ঝুমুর নীলাকে একটা প্রশ্ন করলো--


-----ঝুমুঃ- আঁচ্ছা নীলা একটা কথা বলতে পারিস??--(চোখ বন্ধ করে)-- ভালোবাসায় এতঁ কষ্ট কেন??


( ঝুমুর এমন প্রশ্ন শুনে নীলা থতমত খেয়ে গেলো। কি বলবে ও বুঝতাছে না। ঝুমু আবারো জিজ্ঞেস করলো)


-----ঝুমুঃ- কাউকে মন থেকে ভালোবাসা কি পাপ না অপরাধ?? কোনটা??--(ভাবলেশ হীন কন্ঠে) 

-----নীলাঃ- এমন প্রশ্নের উওর যে আমার কাছে নাই বোইন৷ আমি যে কখনো রিলেশন করি নাই--(দীর্ঘশ্বাস ফেলে)

-----ঝুমুঃ হবে হয়তো বা।--(আর কিছু বললাম না। তখনই নীলার ফোন বেজে উঠলো)


-----নীলাঃ- এই রে বৃষ্টি কল দিয়েছে। 


( বৃষ্টি ওর কলেজ ফ্রেন্ড। নিশ্চয়ই কলেজ এর ব্যাপারে কথা বলবে)


3rd person:- নীলা ফোনটা রিসিভ করে বারান্দার উপাসে চলে গেলো। আর ঝুমুর আগের মতোই বারান্দার রেলিং ধরে চোখ বুজে দাড়িয়ে আছে৷ হঠাৎ এক ধমকা হওয়া আসায় ঝুমুর এর চুল গুলা ওর মুখে আচড়ে পরলো। চোখ খুলে আলতো করে চুল গুলা সড়িয়ে নিলো। তখনই গাড়ির হর্ন এর শব্দ শুনে বাড়ির গেটের দিকে তাকালো সে। দেখলো যে একটা গাড়ি বাড়ির ভিতরে ডুকছে। ড্রাইভিং সিটে রাফিকে দেখতে পেয়ে ঝুমুর এর বুকটা ধক করে উঠলো। কোনো এক অজানা অনুভূতি এসে ওকে ঘিরে ধরেছে। বারান্দার কোনে পিলারের সাথে হেলান দিয়ে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ঝুমু রাফির দিকে। হয়তো ভালোবাসার মানুষকে দেখলে এক অজানা অনুভূতি এসে জরিয়ে ধরে। যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। একমাএ যে কাউকে মন থেকে ভালোবাসে সেই বুঝে। এদিকে রাফি গাড়ি নিয়ে পার্ক করে দরজা নক করে বড় লেন ধরে আস্তে আস্তে হাটতাছে৷ হাটার মাঝে ব্লুটুথটা কান থেকে খুলে পকেটে রেখে দিলো। হঠাৎ করে নীলাশ ফোন দিলো রাফি ফোনটা পকেট থেকে বের করে কলটা রিসিভ করে কানে ধরলো---


-----নীলাশঃ- Hey bro...কি অবস্থা? 

-----রাফিঃ- আমার আবার অবস্থা,, এইমাএ অফিস থেকে বাসায় ফিরলাম তোর কি অবস্থা??--(টেবিল চেয়ার রাখা ও জায়গায় গিয়ে একটা চেয়ার টেনে সেখানে বসলাম)

-----নীলাশঃ- বাসায় আছি এখনো। খুব tried লাগছে খুব। 

-----রাফিঃ- ক্যান ভাই কার বাড়িতে চুরি করতে গেছিলি??

-----নীলাশঃ- ধুর হারামি----বাবার সম্পূর্ণ ব্যবসাটা সামলানো চাট্টিখানি কথা না। কিছুদিন যাক তখন তুইও আমার মতো বলবি।

-----রাফিঃ- ওহহ আচ্ছা। তখন কারটা তখন দেখা যাবে।

-----নীলাশঃ- যাই হোক ঝুমুর এর কি খবর? কেমন আছে ও??

-----রাফিঃ- হুমম আলহামদুলিল্লাহ এখন একটু সুস্থ আছে।


3rd person:-( হঠাৎ করে রাফির দোতলায় ঝুমুর এর বেলকনিতে চোখ গেলো। আর সেখানেই ওর চোখ আটকে গেলো। এলোমেলো ভাবে মেয়েটাকে এতো সুন্দর লাগবে সেটা আজ প্রথম দেখলো রাফি। ঝুমুর আজকে কোনো সেলোয়ার-কামিজ পরে নাই সাদা কাপড়ের ঢিলা ঢালা হাটু পর্যন্ত একটা গাউন পরেছে সে। আর একটা লেহেঙ্গা পরছে হালকা বাতাসে ঝুমুরের চুল গুলা উড়ছে। রাফি তো এক দৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে অপজিটে ঝুমুর ও রাফির দিকে লাগামহীন ভাবে তাকিয়ে আছে। রাফি ঝুমুরকে দেখতে এতঁটাই ব্যস্ত যে ওপাসে নীলাশ যে এতো চিল্লাই চিল্লাই হ্যালো হ্যালো করছে তা ওর কর্নপাত অবদি পৌঁছাচ্ছে না। অপরদিকে ঝুমুর রাফির দিকে আরো কিছুক্ষন ওভাবে তাকিয়ে থেকে। নিজেকে অপরদিকে ফিরিয়ে নিলো। মনে মনে ভাবতে লাগলো।


-----ঝুমুঃ- কি লাভ তোমার মায়াতে নিজেকে জরিয়ে সেই তুমিই তো আমার নও। কিন্তু এ বেহায়া মনকে তো আর বুজাতে পারিনা। কেন যেন এ বেপরোয়া মন বলে যে তুমি শুধুমাএ আমার--একদিন না একদিন তুমি আমার হবেই। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়।--(মনে মনে)


3rd person;- তারপরে নীলা এসে ঝুমুরকে আস্তে করে রুমে নিয়ে গেলো ঝুমুরকে নিয়ে যাবার পরে রাফির ধ্যান ভাঙে আর ও নীলাশ এর সাথে কথা বলে বাড়ির ভিতরে চলে গেলো। এভাবে একসপ্তাহ কেটে যায়। এখন ঝুমুর বলতে গেলে পুরাপরিই সুস্থ। শুধু মাএ রাফির proper care এর জন্য। এ এক সপ্তাহ রাফি ঝুমুরকে একদম চোখে চোখে রেখেছে। এমনকি অফিসে শুধু মাএ ৩ ঘন্টা সময় দিয়ে আর বাকিটা সময় ঝুমুর এর পাসে পাসেই থেকেছে। প্রতিদিন তিন বেলা নিজের হাতে ঝুমুরকে খাওয়ানো সাথে ওষুধ খাওয়ানো। ঝুমুর এর ফেবারিট চকলেট নিয়ে আসা অফিস থেকে ফিরে আসার সময় আর ঝুমুর ঘুমিয়ে গেলে ওর দুই গালে দুইটা চুমু দেয়া যেন ওর অভ্যাসে পরিনিত হয়ে গেছে। যদিও তা ঝুমুর এর অজান্তে। পরিবারে বড়টা তো অনেক খুশি যে রাফি ঝুমুর এর এতটা কেয়ার করে চোখে চোখে রাখে,, এতো ভালোবাসে এটা দেখে। আর অন্যদিকে ঝুমুর ভাবে যে এসব রাফি সবার চাপে পড়ে করছে। রাফির সাথে ও প্রয়োজন ছাড়া বাকি একটা কথাও বলে না। কিন্তু ঝুমুর এর দুই চোখ সব সময় শুধু রাফিকে খুজে। মনের মাঝে একটা সুপ্ত কল্পনা যে রাফি একদিন ওর হবেই। আজ মিলিকে পাএপক্ষ দেখতে আসবে। আর সাথে বিয়ের দিনও ফাইনাল করে যাবে। তাদের অনেক দিনের ইচ্ছে মিলিকে তাদের ঘরের বৌ বানাবে। জনাব আহমদ চৌধুরীর বন্ধুর ছেলে আজকে মিলিকে দেখতে আসবে। তার সাথে তার বন্ধুর অনেক দিন আগে থেকেই কথা যে জনাব আহমদ চৌধুরীর বড় মেয়েকে তারা তাদের ছেলে রাজ এর বউ করে নিবে। আর তাদের প্ররিবারের সাথে রাফিদের পরিবারে অনেক ভালো একটা সম্পর্ক আছে। রাজ কানাডা থেকে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরেছে কয়েক মাস হয়েছে। এখন বাবার ব্যবসা দেখা শোনা করছে। রাজরা পুরা পরিবার সহ এসেছে রাফিদের বাসায়৷। নানা রকমের খাবার দাবার এর আয়োজন করা হয়েছে। শুধু রাজের পরিবার নয় সাথে নীলাশ এর পুরা পরিবারও এখানে উপস্থিত। পুরা ড্রয়িং রুম ভর্তি মেহমান। গল্প গুজোব আর আড্ডার আমেজ সেখানে রাফিরাও সবাই সেই আড্ডা মেতে উঠেছে। সবাই জানে যে মিলিকে আজকে দেখতে আসবে কিন্তু নীলাকেও যে আজকে নীলাশ এর পরিবার দেখতে আসবে সেটা পরিবারের বড়রা ছাড়া আর কেউ জানে না। আর নীলাশ নীলাকে অনেক আগে থেকেই পছন্দ করে। সে তার পরিবারকে এ কথাটা বলে আর ওর পরিবার আজকে এসেছে বিয়ের দিন তারিখ পাকা করতে। রাফি আর নীলাশ ওদের বাকি ফ্রেন্ডদের আনার জন্য বের হয়ে গেছে একটু আগে। ঝুমুর আর নীলা মিলে মিলিকে সাজানো আর শাড়ি পরানোর দায়িত্ব জিনিয়া রিয়া ইশিতার উপরে চাপিয়ে দিয়ে ওরা কেটে পরছে। নীলা হেলে দুলে ঘাসের উপরে হাটছে আর ঝুমুর এক আঙুল দিয়ে চুল খোচাচ্ছে আর চুল ছাড়াচ্ছে। আর এক হাত দিয়ে ফোন টিপছে।


-----নীলাঃ- -আহা--কি আনন্দ যে লাগছে ঝুমুর তুই জানিস না।

-----ঝুমুঃ- পাত্রী দেখতে আসছে মিলি আপুকে। তাহলে তুই এতঁ লাফাচ্ছিস কেন??--(ভ্রু কুচকে)

-----নীলাঃ- এটাই তো---আমিও বুজতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমাকে দেখতে আসছে। ইশশ কবে যে আমাকে দেখতে আসবে--(বাচ্চাদের মতো লাফিয়ে)

-----ঝুমুঃ- OMG,,,,নীলা তুই এতো বিয়ে পাগলি হলি কবে থেকে?? আগে তো জানতাম না।৷ হে আল্লাহ ওকে তুমি হেদায়েত দান করো আমিন--(হাত তুলে)

-----নীলাঃ- বলদ আমি যথেষ্টই হেদায়েতে আছি। তার থেকে তুই আমার বিয়ের জন্য দোয়া কর।

-----ঝুমুঃ-ওকে,,,হে আল্লাহ তুমি ওর মনস্কামনা পূরন করো। যত তাড়াতাড়ি পারো ওকে বিদায় করো। ওর কোল আলোকিত করে শত সন্তানের জননী ওকে বানাও। আমিন--(হাত তুলে মোনাজাত ধরে)

-----নীলাঃ- খবিশ কোথাকার,,,,এটা দোয়া নয়,, বদদোয়া করছিস--(তেড়ে এসে)

-----ঝুমুঃ- তুইই তো বললি দোয়া করতে তাই তো আমি একটু পাচফোড়ন দিয়ে দিলাম দোয়ার সাথে।--(দুরে সরে চোখ টিপ দিয়ে)

-----নীলাঃ- তোকে তো আমি--


3rd person:- সম্পূর্ন কথাটা শেষ করতে পারলো না গাড়ির হর্নের শব্দে। ওরা গেটের দিকে তাকিয়ে দেখলো দুইটা গাড়ি রেসিং এর মতো পাল্লা দিয়ে বাড়ির ভিতরে ডুকছে। গাড়ি দুইটি একদম ঝুমু আর নীলার সামনে এসে দাড়ালো। গাড়ি থেকে রাফি নীলাশ সহ ওদের বাকি বন্ধুরা বের হলো। এমন সময় জিনিয়া ও ইশিতা এসে ঝুমুর ও নিলার কাছে দাড়ালো। রাফি আর নীলাশ এসে ওদের সামনে দাড়ালো পিছনে ওদের বন্ধু তুহিন, ইয়াদ, লারা,ইশান।


-----নীলাশঃ- Hey girls,,, তোমরা এখানে কি করছো??


( নীলা একবার নীলাশকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে নিলো)


-----নীলাঃ- সেটা আপনার যেনে কোনো লাভ নাই।


( ওরা কথা বলছে আর এদিকে রাফি ঝুমুরকে দেখে ওই জায়গায়ই থামকে গেছে)


 

___চলবে....কি?

sorry sorry sorry deri kore deoyar jonne 

Post a Comment

Previous Post Next Post