পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-


পার্টঃ-১৪


-----নীলাশঃ- Hey girls,,, তোমরা এখানে কি করছো??


( নীলা একবার নীলাশকে মাথা থেকে পা পর্যন্ত দেখে নিলো)


-----নীলাঃ- সেটা আপনার যেনে কোনো লাভ নাই।


( ওরা কথা বলছে আর এদিকে রাফি ঝুমুরকে দেখে ওই জায়গায়ই থামকে গেছে ।আজকে ঝুমুরকে রাফির কাছে অনেক সুন্দর লাগছে। চকলেট কালারের Long round dress,,,ফুল হাতা দিয়ে। চুল ছেড়ে দিয়ে মাথায় সাদা strone বসানো। চিকন চেনের মতো টায়রা দিয়ে পেচানো।। চোখে গাঢ় করে কাজল দেয়া আর ঠোটে হালকা লিপস্টিক। ব্যাস এতেই পারফেক্ট রাফিকে পাগল করার জন্য। রাফি তো এক ধ্যানে ঝুমুর দিকে তাকিয়ে আছে অন্যদিকে ঝুমু রাফির দিকে একবার তাকিয়ে আবার চোখ সড়িয়ে নিলো কারন ও রাফির চোখের দিকে তাকালেই,,, ওর চোখের গভিরে হারিয়ে যায়। আজ রাফি একটা ট্রাউজার আর একটা সাদা টি শার্ট পরেছে। চুল গুলা এক দিকে জেল দিয়ে সেট করা। ওদিকে নীলা আর নীলাশ তর্ক নিয়ে বিজি।


-----নীলাশঃ- তোমরা বোঝো কম চিল্লাও বেশি।।কোনো কাজের না তোমরা। শুধু ঝগড়াই করতে পারো। আর দেখো আমরা ছেলেরা কত কিছু করতে পারি। কিন্তু তোমরা কি পারো বলো???আলসের ঢেকি--(তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে)

-----নীলাঃ- ওই হ্যালো মিস্টার। আলসের ঢেকি কাকে বলছেন?? হ্যা?? আমাদেরকে?? আমি আর ঝুমু যা যা করতে পারি তা শুনলে আপনার চোখ চড়কগাছ হয়ে যাবে।।

-----নীলাশঃ- তা তোমরা কি কি করতে পারো?? 

-----ঝুমুঃ- নীলা বাদ দে না এসব বোইন। চল ভিতরে যাই। ফালতু বকবক করে কোনো লাভ নাই--(ওর হাত ধরে)

-----ইয়াদঃ- না নীলা তুমি বলো।

-----নীলাঃ- আমার কথা না হয় বাদই দিলাম আমি যা কিছু শিখেছি সব কিছু ঝুমুর এর কাছ থেকে শিখেছি। ঝুমুর বাইসাইকেল চালাতে পারে। ও বাইসাইকেল রেসং এ অংশগ্রহন করে এ পর্যন্ত ৩টা ট্রফি জিতেছে। কার ড্রাইভিং করতে পারে। computer operating করতে পারে। গ্রাফিক্স ডিজাইন পারে। আগে স্কুলের টপ ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ছিলো এখন কলেজের। কলেজের সেরা singer আমাদের ঝুমুর। কলেজে যদি কোনো ফাংশন এর আয়োজন করা হয় সবার আগে প্রিনসিপাল স্যার ঝুমুরকে ডাক দেয়। আর রান্না বান্নার কথা বাদই দিলাম। ওর হাতের বিরিয়ানির just wow,----আমি ওর থেকে শিখেছি--(একদমে বলে দিলাম)


3rd person:-( সবাই যেন নীলার কথা গুলা শুধু গিলছে। এতোটাই অবাগ হয়েছে যে মুখ থেকে কোনো কথা বের হচ্ছে না। অবশেষে ইয়াদ নিরবতা ভেঙে বললো)


-----ইয়াদঃ- যা বলেছিস---আমি তো পুরাই শকে আছি। ঝুমুর কে দেখতে তো বোঝাই যায় না ও এতো কিছু পারে। সত্যি ঝুমুর তুমি সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছো। বাহহহ।

-----লারাঃ- সত্যি ঝুমুর তুমি এতো কিছু পারো--(সন্দিহান চোখে)---I can't believe that---

-----নীলাঃ- আপনি বিশ্বাস করলেই বা কি আর না করলেই বা কি। সত্যি তো এটাই যে আমার বনু সব কিছুতে টপার। I am Proud of my sister.


♠ওদিকে রাফি আর নীলাশ তো এখনো শকের চরম পর্যায়ে আছে। এরকম কিছু শুনবে ওরা এটা আসা করে নি♠


-----নীলাশঃ- এতোকিছু একসাথে??How??আমি বলতে চাচ্ছি এতো কিছু কোথা থেকে শিখলে ঝুমু?? আর এর পিছনে কি কোনো কারন আছে??

-----ঝুমুঃ- আসলে কেউ একজন বলেছিলো যে আমার দ্বারা কোনো ভালো কাজ হবে না আমি কোনো কাজের যোগ্য নয়। আমার দ্বারা শুধুমাএ না কি অকাজই হবে। সেই কথায় আছে না ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। তাই আমিও দেখিয়ে দিলাম।--(রাফির দিকে তাকিয়ে)


3rd person:-( ঝুমুর ওর দিকে তাকিয়ে কথা গুলা বলায় ওর কাশি উঠে গেলো। নীলাশ ওর পাসেই ছিলো তাই ও রাফির মাথায় আর পিঠে চাপর দিতে লাগলো)


-----নীলাশঃ- তোর আবার কি হলো??

-----লারাঃ- রাফি Are you okhy?

-----রাফিঃ- আমি ঠিক আছি।


3rd person:- রাফির এমন কান্ড দেখে ওদিকে ঝুমুর এর পেট৷ ফেটে হাসি আসছে। বেচারাকে বড় রকমের জব্দ করতে পেরেছে।


-----জিনিয়াঃ- এই রে আমি তো একদম ভুলেই গেছিলাম। যে বড় আম্মু তোমাদের সেই কখন ডেকেছে। আর তোমরা কি না এখানে দাড়িয়ে আছো।

-----রাফিঃ- আচ্ছা তোরা যা আমরা আসতাছি।


( যাবার সময় নীলা নীলাশ এর কাছে এসে কানের কাছে মুখ এনে)


-----নীলাঃ- এই যে Item pisace ভাইয়ার ফ্রেন্ড৷ আমিও কিন্তু ঝুমুর এর মতো অনেক কিছু পারি। ঝুমুর Badminton চ্যাম্পিয়ন আর আমি বাস্কেট বল চ্যাম্পিয়ন। so আমাকে নিয়ে উপহাস করবেন না। বেশি তেড়িবেড়ি করলে একদম বাস্কেট বলের মতো তুলে আচার মারবো।---mind it--।


3rd.person:- একথা বলে নীলা চলে গেলো অন্যদের সাথে আর নীলাশ বেচারা অসহায় ভাবে তাকিয়ে আছে নীলার যাওয়ার দিকে। আর মনে মনে ভাবছে,,,


♠--মাইরালা আল্লাহ গো খাল কেটে কুমির আনতাছি না তো? তুমই দেইখো। আমারে রক্ষা কইরো---♠


3rd person:- তারপরে সবাই ভিতরে চলে গেলো। মিলিকে পাত্রপক্ষের সামনে আনা হয়েছে। সবাই ভিন্ন রকমের কথা বলছে। ওরা সবাই এক এক জায়গায় গিয়ে দাড়ালো কারন বড়রা পুরা জায়গা জুড়ে বসে আছে। ঝুমুর এক কোনে গিয়ে দাড়িয়েছে। নীলাকে ওর আম্মু এসে ডেকে নিয়ে গেছে। বাকিরা সবাই সামনাসামনি দাড়িয়েছে। লারা মেয়েটা এমনতেই একটু গায়ে পরা মেয়ে। সেই তখন থেকে রাফির সাথে গায়ে পড়ে কথা বলছে,,একটু বেশি ঘেষাঘেষি,,আর হাসাহাসি করছে। দুর থেকে সব কিছু ঝুমুর দেখছে। ওর বুকে ফেটে কান্না আছে এসব দেখে। কিন্তু কান্না করতে পারছে না। তবুও ঝুমুর এর চোখ বেয়ে দু ফোঁটা পানি গড়িয়ে পরলো। সেটা ঝুমু দু হাত দিয়ে মুছে নিলো। ওর একটুও খেয়াল নেই যে রাফি ওর পিছনে দাড়িয়ে আছে। আসলে রাফি সেখান থেকে খেয়াল করেছিলো যে ঝুমু মনভার করে দাড়িয়ে আছে। ও সেখানে আর না থেকে ঝুমুর পিছনে এসে দাড়ালো। আর এসে দেখলো যে ঝুমু চোখ মুছছে হাত দিয়ে।। কোনোকিছু না বলে ঝুমুর এর কোমড়ে দু হাত দিয়ে ঝটকা টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো। ঝুমুরের পিঠ রাফির বুকে গিয়ে লাগলো। রাফি একদম শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো পিছন থেকে ঝুমুরকে। ঝুমুর তো এমন কান্ডে অনেক ভয় পেয়ে গেলো। সে চিৎকার করতে গেলে রাফি ওর হাতের আঙুল দিয়ে ঝুমুর ঠোটো স্লাইড করে বললো--


-----রাফিঃ- হুশশশ,,,চিৎকার করিস না আমি--(ছোট কন্ঠে) 

-----ঝুমুঃ- ছাড়ো কি করছো?? কেউ দেখে ফেলবে তো--(মোচরামুচরি করে)

-----রাফিঃ-চুপ একদস চুপ,, কোনো কথা না। কেউ কি দেখবে আবার?? ♠just keep your mouth shut up stupid girl♠--(তোমার মুখ বন্ধ করে রাখো শুধু দুষ্টু বালিকা)--(ধমক দিয়ে)


3rd person:- ধমকে কাজ হয়েছে। ঝুমুর একদম চুপ। এমনকি মোচরামুচরিও করছে না। সে অনুভব করতে লাগলো রাফির স্পর্শ গুলা। ড্রয়িং রুমে এক কোনে বড় একটা ফুলদানি রাখা সেই ফুলদানির পিছনে পর্দার আড়ালে রাফি আর ঝুমু দাড়িয়ে আছে। সেখান থেকে সবাইকে।দেখা যায়। কিন্তু কেউ যদি ভালো করে না লক্ষ করে তাহলে বুজতেই পারবে না কেউ যে ওরা ওখানে কি করছে।

 আর কেউ খেয়াল করছে না এদিকে। সবাই ওদিকটা নিয়ে বিজি৷ ওদিকে নীলাকে ওর আম্মু রুমে নিয়ে গিয় জোর করে শাড়ি পড়িয়ে নীলাশ এর পরিবার এর সামনে নিয়ে গেলো। বেচারি অনেক বার প্রশ্ন করলো কিন্তু কোনো উওর সে পেলো না। তার আম্মু তাকে নীলাশ এর পরিবার এর সামনে নিয়ে দাড় করিয়ে।


-----রাফির আম্মুঃ- এই যে ভাবি নীলাকে নিয়ে আসছি।


3rd person:-( নীলাশ তার বাবার পাসে বসে অন্যদিক লক্ষ করছিলো তখন রাফির আম্মুর কথা শব্দ শুনে সামনে তাকালো। সামনে তাকাতেই তো ও জমে গেলো। কারন নীলাকে নীল শাড়িতে অপুর্ব লাগছে। চুল গুলা হাফ খোপা করা,,দুই হাতে দুটো চুরি,,মাথায় গোমটা টানা,,একদম বউ বউ লাগছে ওকে। নীলাশ এর মা বসা থেকে উঠে নীলার পাসে গিয়ে ওর থুতনি ধরে মাথা উপরে তুলে।


-----নীলাশের আম্মুঃ- মাশাল্লাহ আমার নীলা মাকে তো আজকে অনেক সুন্দর লাগছে। এরকম একটু হুরপরিই আমি আমার ছেলের জন্য চেয়েছিলাম।


3rd person:- তিনি নীলার কপালে একটা চুমু দিয়ে ওর হাতে সোনার বালা পরিয়ে দিলো। নীলা তো কিছুই বুজতে পারছে না কি হচ্ছে তার সাথে এসব। ওর মনে হচ্ছে ও এক গোলকধাধায় রয়েছে। প্রথমে নীলার পরিবার এ বিয়ে রাজি ছিলো না কারন নীলা এখনো অনেক ছোট। ও বিয়ের বয়স হয় নাই এখনো। কিন্তু অপরদিকে নীলাশ ছেলেটা যেমন ভালো তেমনই তার পরিবারও অনেক ভালো। সব চেয়ে বড় কথা হলো যে নীলা ওদের মাঝে হ্যাপি থাকবে খুশি থাকবে। কারন নীলাশ নীলাকে অনেক ভালোবাসে। তাই তারা রাজি হয়েছেন। নীলাম আম্মু সবার উদ্দেশ্য বললো


-----নীলাশের আম্মুঃ- আচ্ছা তাহলে ওদেরকে আলাদা কথা বলতে পাঠাই। কি বলেন আপনারা??

-----রাফির দাদুঃ- দিদাই নীলাশ কে তোর রুমে নিয়ে যা৷ কেমন??


( নীলা ভয়ে কিছু বলতে পারলো না। আবার মুখের উপরে নাও করতে পারলো না।)


-----নীলাঃ- ('এই পাটাকে আমার রুমে নিয়ে যেতে হবে কেন?? ধুর)--জ্বি দাদু যাচ্ছি--(নীলাশের দিকে রাগি লুক নিয়ে)--আসুন--


-----নীলাশঃ-( মুচকি হেসে-)--হুম চলো।


♠নীলা বাধ্য হয়ে নীলাশ কে নিয়ে ওর রুমে।গেলো। একটু আগে মিলিকেও রাজের সাথে ওর রুমে পাঠানো হয়েছে আলাদা করে কথা বলার জন্য♠


 ~~~চলবে~~~ 

Post a Comment

Previous Post Next Post