গল্প জ্বিনের সংসার
শেষ -পর্ব
#লেখক__মোঃ__নিশাদ
সবাই চলে জাবার পর জান্নাত রুমে একা একা কান্না করতে লাগলেন।
গভীর রাত, জান্নাতের ঘুম আসছেনা। একা একা শুয়ে কান্না করেই চলেছে।
হঠাৎ ওর কাছে ইকরা আসে। সুধু ইকরা না। সারফারাজ ও আসে।
সারফারাজ ও ইকরাকে দেখে জান্নাত বললো।
জান্নাত - সারফারাজ, তুমি আসছো।
সারফারাজ - কান্না করছো কেনো।
জান্নাত - মা বাবা আমার বিয়ে ঠিক করছে, কাল বাদ পড়শু আমার বিয়ে। তুমি কিছু একটা করো।
সারফারাজ - বিয়ে কার। বিয়ে তোমার আমি আর কতবার আঁটকাবো। জান্নাত আমি হেরে গেছি তোমার কাছে,, আমাকে বা আমার মেয়ের প্রতি তোমার কোন ভালোবাসা থাকলে তুমি বিয়েতে রাজি হতানা।
জান্নাত -সেটা না...
সারফারাজ - চুপ করো আর একটা কথাও বলবানা। ভালো থাকো মুক্ত করে দিয়ে গেলাম তোমাকে এবার তো খুশি। ইকরা মা চলো।
জান্নাত- ইকরাকে নিয়ে যেওনা, প্লিজ আমার মনের অবস্থা ভালোনা। ওকে আমার কাছে দু একদিন রাখো পরে না হয় নিয়ে যেও।
জান্নাতের কথায় সারফারাজ কিছু না বলে মন খারাপ করে ইকরাকে রেখে চলে গেলো।
এভাবে কেঁটে গেলো সেই রাত ও পরের দিনটা। জান্নাত দোটানায় পড়ে আছে সে কি করবে। অতীতের সংসারে ফিরে জাবে, নাকি পরিবারের কথায় আরিফকে বিয়ে করবে।
এসব চিন্তায় চিন্তায় চলে গেলো সময়। চলে আসলো বিয়ের দিন।
বিয়ের দিন। বউ সেজে বসে আছে জান্নাত, কিছক্ষন পর বিয়ে।
বাড়িতে জান্নাতের মা বাবা, চাচা চাচি, মামা মামি সবাই আছে।
একটু পরেই বিয়ে, হঠাৎ সারফারাজ সেখানে আসলেন, সারফারাজকে দেখে জান্নাতের বাবা ও মামা বলে উঠলেন।
জান্নাতের বাবা - সারফারাজ তুমি কেনো আসছো। দেখো আগে অনেকবার জান্নাতের বিয়ে ভেঙে দিছো দয়া করে আর এসব করোনা৷
জান্নাতের মামা- সারফারাজ, আজকে কোন ঝামেলা করোনা। ঝামেলা করলে তোমারি ক্ষতি হবে। তুমি যদি আজ কিছু করো তাহলে আমরা তোমার মেয়ে ইকরাকে ছাড়বোনা। ইকরা আমাদের হাতে বন্ধি। আর খুব বড় একজন কবিরাজ ও রেডি করে রাখছি, আজ কোন ঝামেলা করোনা যাও চলে যাও।
সারফারাজ - হুম, কবিরাজ না। কবিরাজ নিয়ে আসছেন, এই বলে সারফারাজ হাত দিয়ে ইশারা করতেই শূন্যে থেকে সেই কবিরাজ ধাম করে নিচে পড়লেন, কবিরাজকে দেখে মনে হলো শূন্যে তুলে কেউ সজোড়ে আচার মারলো।
কবিরাজকে আচার মেরে সারফারাজ বললো।
সারফারাজ - এসব কবিরাজ দিয়ে আমাকে আঁটকাতে পারবেন ভাবছেন, আমার শক্তি সর্ম্পকে আপনারা কিছুই জানেন না। এক লাখ জ্বিনের সর্দার আমি। আমি চাইলে মহূর্তে আপনাদের গ্রামকে ধুলোয় মিশিয়ে দিতে পারি কিন্তু আমি সেটা করবোনা আমার মা বাবা আমাকে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে শেখায়নি।
এই বলে সারফারাজ আসতে আসতে জান্নাতের দিকে এগিয়ে গেলো। এগিয়ে গিয়ে কান্না ভরা চোখে জান্নাতকে বললো।
সারফারাজ - আজ তোমার বিয়ে, আজ থেকে হয়তো তুমি অন্য কারো হবে, জানো খুব কষ্ট হচ্ছে, নিজের বউকে অন্য কারো হতে দেখে, তুমি আমার সাথে সংসার করছো, তোমাক কিভাবে ভুলবো বলতে পারো। যাইহোক, অনেক কষ্ট দিছি তোমাকে পারলে মাফ করো 😥
আমি জ্বিন জাতী এটাই আমার অপরাধ তাইনা। আপনারা সবাই আমাকে মাফ করবেন। আর কখনও আপনাদের মাঝে আসবোনা। 😭
এই কথাটা বলে, কান্না করতে করতে সারফারাজ মেয়ে ইকরাকে নিয়ে সেখান থেকে চলে আসতে জাবেন, ঠিক তখনি জান্নাত বললেন।
জান্নাত - দাঁড়াও সারফারাজ যেওনা, তোমার বউকে নিয়ে যাও, তোমার মেয়ের মাকে নিয়ে যাও। আমাকে ছেড়ে যেওনা। 🥺
জান্নাতের কথায় সারফারাজ থেমে গেলেন। এদিকে জান্নাতের মুখে এসব কথা শুনে ওর মা বাবা অবাক হয়ে বললেন।
জান্নাতের বাবা- জান্নাত কি বলছিস এসব।
জান্নাত- বাবা, বিশ্বাস করো আমি আমার পুরুনো কোন স্রিতি মনে করতে পারছিনা, কিন্তু সারফারাজ আর আমার মেয়ের ভালোবাসায় আমি মুগ্ধ, আমি সারফারাজের সংসারে ফিরে যেতে চাই। বাবা তোমার পায়ে পড়ি, আমাকে আর বাঁধা দিওনা। বাবা আমি তোমার কথার অবাদ্দ কখন হইনি, কিন্তু এভাবে আমাকে বর আর বাচ্চার কাছ থেকে আলাদা করোনা। দয়া করো।
এই বলে জান্নাত হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলেন। জান্নাতের কান্নায় সবার মন গলে গেলো। সবাই হাড় মেনে নিলেন জান্নাত ও সারফারাজের ভালোবাসার কাছে।
জান্নাতের মামা- জান্নাত মা আমরা তোর আর সারফারাজের ভালোবাসার কাছে হেরে গেলাম, আমি এখনি আরিফের বাবার কাছে গিয়ে মাফ চাচ্ছি, তোর আর আরিফের বিয়ে ভেঙে দিচ্ছি তুই যা তোর পুরুনো সংসারে ফিরে যা।
জান্নাত বাবা- হ্যাঁ মা, আমরা তোকে জোর করে অন্য কোথাও বিয়ে দিতে চাইছি, সেই জন্য মাফ চাচ্ছি, তুই সারফারাজের কাছে ফিরে যা।
জান্নাতের মা- দোয়া করি সব সময় ভালো থাক।
সবাই জান্নাত ও সারফারাজকে মেনে নিছে,, খুশিতে জান্নাত ও সারফারাজের চোখে পানি।
সবাই মেনে নেয়ায়, সারফারাজ সবার কাছে বিদায় নিয়ে জান্নাতকে নিয়ে জ্বিনের রাজ্যে আসে। জ্বিনের রাজ্যে এসে নদীর পারে একটা গাছের নিচে বসে সারফারাজ বলে ।
সারফারাজ - জান্নাত তোমাকে ফিরে পাবো সত্যি ভাবিনি।
জান্নাত- তাই,, এখন তো ফিরে পাইছো, এখন তো খুশি।
সারফারাজ - হ্যাঁ অনেক খুশি। আমি কালকেই জ্বিনদের রাজ্যে ধুমধাম করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো।
জান্নাত- তুমি খুশি কিন্তু আমি খুশিনা।
সারফারাজ - কেনো।
জান্নাত- কারণ, গল্প পড়া মেয়ে গুলো সবাই তোমার উপর ক্রাস খায় তোমার সাথে প্রেম করতে চায় বিয়ে করতে চায়। 😒
সারফারাজ - হাহাহা তুমিওনা। আচ্ছা সবার কাছ থেকে বিদায় নাও।
জান্নাত- সবাই অনেক ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
সারফারাজ - সব সময় ভালো থাকবেন। আসসালামু আলাইকুম।
এভাবে আনন্দের মাঝে শেষ হয়ে গেলো জান্নাত ও সারফারাজের কাহিনি।
সমাপ্তি।
গল্পটা কেমন লাগছে, অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। কালকে খুব সুন্দর ও রহস্যময় একটা নাগীনের গল্প, সাপের গল্প নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন, আসসালামু আলাইকুম।
Post a Comment