#-পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-
#✪পার্টঃ-০৮✪
-----ইয়াদঃ- দেখো সবাই ড্যান্স করছে। আমরাও করতে পারি Friend হিসেবে। প্লিজ।
-----ঝুমুঃ-- ওকে--(কিছুক্ষণ ভেবে)
★
3rd person:- ঝুমুর ও চলে গেলো ইয়াদ এর সাথে ড্যান্স করার জন্য। আবির ড্যান্স পছন্দ করে না তাই বসে আছে। হঠাৎ করে রাফির নজর গেলো যে ইয়াদ এর সাথে ঝুমু নাচতাছে। এটা দেখে তো রাফির মাথায় রক্ত উঠে গেলো। না পারছে দেখতে না পারচে সইতে আর না পারছে গিয়ে ঝুমুর এর গালে ঠাসস ঠাসস করে থাপ্পড় মারতে। রাগে তার সারা শরির জ্বলছে। একপর্যায়ে ড্যান্স পার্ট শেষ হয়ে গেলো। ড্যাস শেষ হবার পরও কিছুক্ষণ আড্ডা দিলো সবাই। তারপরে নিচে গিয়ে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রাফির ফ্রেন্ডরা সবাই রাফিকে বিদায় জানিয়ে যার যার বাসায় সে চলে গেলো। রাফি সবাইকে বিদায় দিয়ে ওর রুমে চলে গেলো। ওর রুম পুরা বোজাই হয়ে গেছে গিফট এ। এতো পরিমান গিফট আজ রাফি পেয়েছে।। সে বিছানায় বসে সব গিফট গুলা খুলে খুলে দেখতে লাগলো। সেই সময়ই কে যেন দরজা৷ ওপাস দিয়ে দরজা নক করলো
-----রাফিঃ- কে???( তখনই মেয়েলি কন্ঠে ভেসে আসলো- "আসবো"?)---বুজলাম ঝুমুর এসেছে)-- হুম এসো।
-----ঝুমুঃ-( হাতে একটা বড় গিফট এর প্যাকেট)
-----রাফিঃ- কি আছে ওতে?
-----ঝুমুঃ- আসলে আগে গিফটা দিতে পারি নাই তাই এখন দিতে আসলাম।--(নিচের দিকে তাকিয়ে)
-----রাফিঃ- ওমা তাই না কি?--(ব্যাঙ্গ ধরে)--দেখি তঁ কি আছে?
3rd person:- রাফি ঝুমুরের কাছ থেকে গিফট প্যাকেট টা নিয়ে খুলে দেখলো যে তার মধ্যে সাদা মখ মলের ডিজাইন করা একটা সুন্দর পাঞ্জাবি রাখা। আজকে এমনিতেও রাফি ঝুমুর এর উপর অনেক রেগে আছে। তাই রাফি সিদ্ধান্ত নিলো যে আজকে ঝুমুকে এমন অপমান করবে যে আর কখনো ভুলের যাতে করে রাফির সামনে ভাব দেখাতে সাহস পাবে না।এবং জিবনে কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে হলে দুবার ভেবে যেন বলতে হয়
-----রাফিঃ- এরকম Third class ট্যাইপের গিফট অবশ্য তোর মতো মেয়েরাই কাউকে দেয়।
( কথাটা শুনে ঝুমুর রাফির দিকে অবাগ নয়নে তাকালো)
-----রাফিঃ- এতো কম দামি গিফট তো আমাকে কেউই দেয় নাই। ওদিকে তাকিয়ে দেখ কত দামি দামি গিফট, ওগুলার কাছে তোর দেয়া গিফট তো নখের সমানও না। আর তুই ভাবলি কি করে এরকম Third class type এর গিফট তাও আবার তোর মতো একটা মেয়ে উপহার দেয়া তা আমি পড়বো।--(পাঞ্জাবিটা মাটিতে ফেলে দিয়ে)
-----ঝুমুঃ--(করুন নয়নে রাফির দিকে তাকিয়ে আছি। চোখ থেকে কয়েক ফোটা পানি গড়িয়ে পররো। কখনো ভাবতেই পারি নাই যে এতোটা অপমানিত হতে হবে)
-----রাফিঃ- তোর এতো Attitude যে আর সবাই Birthday wise করেছে। কিন্তু তুই করিস নাই। এমনকি ওখানে উপস্থিত ও ছিলি না। ওরা তো আমার জন্য কত সুন্দর একটা সারপ্রাইজ প্লানও করেছে কিন্তু তুই কি করেছিস??
( রাফি গিয়ে ঝুমুর এর হাত।খুব শক্ত করে চেপে ধরে)
-----রাফিঃ- পরপুরুষের হাত ধরতে খুব মজা তাই না? খুব ভালো লাগে তাদের সাথে নাচতে?--(খুব জোরে হাত মুচরে)
-----ঝুমুঃ--(ব্যাথায় কুকিয়ে উঠেছি। কিন্তু তবুও কিছু বলছি না। সব কিছু মুখ বুঝে সহ্য করে নিচ্ছ)
-----রাফিঃ- তোর মতো মেয়েরা তো এসবই করতে জানে ছেলেদের সাথে। ১৯-২০ গিরি তো খুব ভালো ভাবেই শিখেছিস।
-----ঝুমুঃ-(নিরবে কাদতে কাদতে চোখ মুখ ফুলে গেছে। এসব শোনার আগে আমার মরন হলো না কেন?)
-----রাফিঃ- আর একটা কথা মনোযোগ দিয়ে শোন তোর এই ভালোমানুষি, Attitude, রুপের বড়াই অন্য কারো সাথে করিস। আমার সামনে কখনো করবি না। আর হ্যা আজকে থেকে তোর মুখও আমি দেখতে চাই না। আমার সামনে কোনোদিনও আশার চেষ্টা করবি না তাহলে খুব খারাপ হয়ে যাবে--(আঙুল তুলে)
-----ঝুমুঃ-( কথা বলতে পারছি না তবুও অনেক কষ্টে কথাটা বললাম)--চিন্তা করো না আজ থেকে আর কখনো আসবো না তোমার সামনে। দেখাবো না আমার এই অপয়া মুখ তোমাকে। তবে প্লিজ একটা প্রার্থনা করবে যে আজকে রাতেই যেন আমার মৃত্যু হয়।--( এ বলে দৌড়ে নিজের রুমে চলে গেলাম)
-----রাফিঃ-( ওর শেষ কথাটা শুনে বুকটা ধক করে উঠলো। তাহলে কি আমি বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি না কি? এতো কিছু শোনানো মনে হয় ঠিক হয় নাই)
3rd person:- হঠাৎ করে রাফির টেবিলের দিকে চোখ গেলো। ছোট বড় অনেক গুলা গিফট বক্স রাখা। সে টেবিলের পাসে গিয়ে তার সামনে রাখা বক্সটা তুললো। খুলার পরে দেখতে পেলো যে অ্যানটিকের অনেক দামী একটা শো- পিস রাখা।
-----রাফিঃ- আরে এ শো- পিচটা দেখতে তো অবিকল সেই শো- পিচটার মতো যেটা আজ থেকে ৫ বছর আগে ঝুমুর ভেঙেছিলো। এটা কোথা থেকে এলো আর কে দিলো?--(বিরবির করে)
3rd person:- রাফি পাসে রাখা আর একটা বক্স খুলে দেখলো সেটা রাখা রাফি যে পারফিউমটা ইউজ করে সেটা। আরেকটায় রাখা রাফির সব থেকে প্রিয় ব্রান্ড এর ঘড়ি আরেকটায় রাখা My love লেখা দিয়ে ডিজাইন করা একটা ফ্রেম এর মধ্যে রাফির হাস্যরসের একটা পিকচার। রাফি ভাবচে এগৃলা কে দিলো। প্রত্যেকটা গিফট এ অভাগি লেখা। হঠাৎ করে শেষ গিফটা তুলে দেখার সময় সেটার নিচে একটা চিঠির মতো কাগজ দেখতে পেলো। সে সেটা খুলে পড়তে লাগলো।
প্রিয়
তোমার নাম উচ্চারণ করে মুখে নেবার মতো অধিকার আমার নাই। আমি জানি তুমি আমাকে অনেক বেশি ঘৃনা করো। আমাকে সহ্য করতে পারো না। তাই তো পাচ বছর আগে আমাকে কাদিয়ে আমার থেকে দুরে চলে গিয়েছিলে। সেই ৫ বছর কেদেছি তুমি কাছে না থাকায়। এখনো তুমি আমার অনেক কাছে। তবুও কাদতে হয় তোমার করা অবহেলা আর অপমানের জন্য। কি দোষ করেছিলাম আমি বলতে পারো? ৫ টা বছর কি কম ছিলো কাদানোর জন্য? একটা সময় ছিলো যখন আমি কাদলে তুমি ব্যস্ত হয়ে পড়তে আমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য। তখন তুমি আমার মুখে এক চিলতি হাসি ফুটানোর জন্য কত কিছুই না করতে। আর এখন তুমি আমাকে কি করে কাদাবে কি করে আমার চোখ থেকে অজোড় ধারায় পানি ঝরাবে সেই নিয়ে সব সময় ব্যস্ত থাকো। ভেবেছিলাম আজকে তোমাকে বলবো কতটুকু ভালোবাসি। কিন্তু তা বলা হয়ে উঠে নি কোনো এক কারনে। তোমার মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমি আমার তুচ্ছ জিবনটাও বাজি রাকতে পারি। যেদিন দেখবো তুমি অন্য কারো হয়ে গেছো সেদিনই হবে আমার জিবনের শেষ দিন। সর্বশেষ একটা কথাই বলবো---ভালোবাসি অনেক অনেক বেশি ভালোবাসি আমার সেই পাগলটাকে। I love you a lot more than of my life.
✪ইতি অভাগী ঝুমু✪
3rd person:- কাগজাটা পরে রাফি তো একেবারে শিহরিত। কিছু বলার ভাষাই হারিয়ে ফেলেছে। ওদিকে ঝুমুর নিজের রুমে গিয়ে কাদতে লাগলো। ওর ভিতরটা ফেটে যাচ্ছে কষ্টে। হয়তো কষ্ট গুলা কিছুটা এই চোখের পানি দিয়ে বের হচ্ছে। আজকের রাফির করা অপমান কিছুতেই সহ্য করতে পারছে না ঝুমু।
----ঝুমুঃ- (জোরে জোরে ফুপাতে লাগলাম)--জানতাম ঘৃনা করো। কিন্তু এতোটা যে ঘৃনা করো তা জানতাম না। আল্লাহ আমাকে মেরে ফেলো। কেন বাচিয়ে রেখেছো আমারে? আমি যে এতো কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।
3rd person:- হঠাৎ করে ঝুমুর জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। মনে হচ্ছে ওর ফুসফুসটা ফেটে যাবে। নাক থেকে রক্ত পড়তে লাগলো। খুব বেশি করে শ্বাস কষ্ট হতে লাগলো। মাথা ঘুরিয়ে নিচে পরে গেলো। টেবিলের কোনায় ওর মাথায় জোরে আঘাত লাগলো। আর ওর চারদিকে শুধু অন্ধকার মনে হচ্ছে। নীলা কি যেন মনে করে ঝুমুর এর রুমের দিকে আসলো। নীলা দরজা খুলে ভিতরে এসে দেখতে পেলো যে ঝুমুর নিচে পরে আছে। ওর মাথা ফেটে গেছে,,নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। নীলার বুকটা ধক করে উঠলো। সে জোরে চিৎকার করে দৌড়ে ঝুমুর এর কাছে গেলো।
-----নীলাঃ- ঝুমুর---এই ঝুমুর-- কি হয়েছে তোর?? এই ঝুমুর কথা বল প্লিজ। কথা বল।--(ঝুমুর এর গালে হাত দিয়ে)
( নীলা এখন কেদে দিলো যেই দেখলো ঝুমুর কোনো কথা বলছে না। জোরে জোরে সবাইকে ডাকতে লাগলো)
-----নীলাঃ- আব্বু আম্মু মেঝো আব্বু কে কোথায় আছো?? প্লিজ সবাই ঝুমুর এর রুমে আসো তাড়াতাড়ি।--(চিৎকার করে)
( ঝুমুর এর আম্মু দৌড়ে আসলো সবার আগে)
-----ঝৃমুর আম্মুঃ- নীলা কি হয়েছে? চিৎকার--
( বাকিটুকু বলতে পারলো না তার আগেই নিচের দিকে চোখ গেলো। আর দেখলো যে ঝুমুর নিচে পরে আছে)
-----ঝুমুর আম্মুঃ- নীলা কি হয়েছে আমার মেয়ের??
-----নীলাঃ- জানি না মেঝো আম্মু।কিছু জানি না। আমি ঝুমুর এর রৃমে এসে দেখি ও নিচে পরে আছে।
-----ঝুমুর আম্মুঃ- ওগো শুনছো দেখো না আমার মেয়ে জানি কি রকম করছে তাড়াতাড়ি আসো।
( নীলার আর ঝুমুর আম্মুর চিৎকার শুনে ঝুমুর রুমে চলে এলো)..
চলবে👉
Post a Comment