_পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ_


 ✔পার্টঃ*০৫✔


----রাফিঃ---(হঠাৎ করে আছিব এর দিকে চোখ গেলো। ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে ও ঝুমুর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওর এমন চাহনি অন্য কিছু বলছে। মনে তে হচ্ছে ওর গাল চাপটিয়ে ফাটিয়ে দেই। তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করলাম। কিছু বললাম না। এখন কাউকে কিছু বলা যাবে না। আচমকা লারা প্রশ্ন করে বসলো)


-----লারাঃ- আচ্ছা রাফি তুমি কি সিঙ্গেল? 

-----রাফিঃ- হঠাৎ করে এ প্রশ্ন কেন?

-----লারাঃ- আসলে তুমি এতো কিউট একটা ছেলে যে কোনো মেয়ে তোমাকে দেখলেই ক্রাস খেয়ে যাবে। তাই আর কি কৌতুহল বসৎ জিজ্ঞেস করলাম--(সিঙ্গেল হলে তোমার সাথে আমি সেটিংস লাগাই দিবো)

-----রাফিঃ- লন্ডন এ অনেক মেয়ে gf হতে চেয়েছিলো কিন্তু আমি বানাই নাই। প্রেম টেম থেকে বিশ্বাস উঠে গেছে আমার তাই আজও আমি সিঙ্গেল--

-----নীলাঃ- কেন রে ছ্যাকা খেয়েছিস না কি ভাইয়া তুই?

-----রাফিঃ- ধুর না ছ্যাকা খাই নাই। তবে একজনকে খুব ভালো লাগে। 

-----ইয়াদঃ- তা কে সে ভাগ্যবতী যাকে তোর মনে ধরলো??

-----রাফিঃ- নাম বললে চাকরি থাকবে না মামা--(ঝুমুর এর দিকে একটা ডেভিল হাসি দিয়ে।) 


3rd person:-ঝুমুর রাফির দিকে একনজর বিষন্ন নজরে তাকিয়ে আবার চোখ সরিয়ে নিলো।


-----ঝুমুঃ- (যাকে আমি এতো করে তোমার কাছে চাইলাম আল্লাহ সেই কি না অন্য কাউকে ভালোবাসে। তার মনের গহিনে জায়গা দিয়েছে। যাই হোক সে যদি আমার ভাগ্যে থাকে তাহলে সে আমার হবে। এ নিয়ে আমি আর ভাববো না)--মনে মনে।


3rd person:- হঠাৎ করে রাফির আম্মু এসে সবাইকে খাবার খাওয়ার জন্য ডেকে গেলো।


-----রাফির আম্মুঃ- এই তোমরা সবাই খাবার টেবিলে যাও। সবার জন্য খাবার রেডি।

( সবাই তখন হুড়মড় করে ডাইনিং রুমে চলে গেলো। আর ঝুমুরও তারাহুরা করে উঠতে গিয়ে টেবিলের কোনায় ধাক্কা খেয়ে একদম পড়বি তো পর রাফির উপরে পরে গেলো। আর রাফি তখন সবে মাএ উঠতে যাচ্ছিলো বসা থেকে। আর তখনই ঝুমুর এসে ওর উপরে পড়াই আবার আগের জায়গায় বসে পরে। আর ঝুমুর ওর উপরে এমন করে পরেছে যে আচমকা পরস্পরের ঠোট এক হয়ে গিয়েছিলো। ঝুমুর রাফির টি শার্ট এর কলার আকরে ধরলো। এমন ঘটনায় তো ঝুমুর একদম হতভম্ব হয়ে গেছে। আর রাফি তো অবাগ দৃষ্টিতে ঝুমুর এর দিকে তাকিয়ে আছে। ঝুমুর ভয়ের জন্য চোখ বন্ধ করে রাফির কলার আরো জোরে ধরলো। আর রাফির মনে তো উথাল পাতার বইতাছে। সে আর নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে ঝুমুরকে টাইট করে জরিয়ে ধরে ওর ঠোটে চুম্মা দিতে লাগলো। ঝুমুর রাফির বুকের সাথে একদম মিশে আছে। ও কোনোমতেই নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। নীলা ঝুমুর এর রাফির প্রতি feelings টা জানতো আগে থেকেই। তাই সে এসব দেখে সেই রুমের দরজা লাগিয়ে দিয়ে চলে গেলো। ওদিকে খাবার টেবিলে নীলা গিয়ে বললো)


-----নীলাঃ- আম্মু ভাইয়ার খাবার তুমি তুলে রেখে দাও সে পরে খাবে বলছে। আর ঝুমুর ওর রুমে গেছে একটু পরে খাবে বলছে।

-----রাফির আম্মুঃ- ওকে তুই বস।

-----নীলাঃ- হুমম।


3rd person:- ওদিকে ঝুমুর এর অবস্থা তো খারাপ। রাফির তো ছাড়া কোনো নামই নাই। রাফি একটা ঘোর এর মধ্যে আছে। আর ঝুমুর নিজেকে রাফির থেকে ছাড়াতে ব্যর্থ। ঝুমুর এবার বুজতে পারলো যে রাফি যদি নিজ থেকে ওকে না ছাড়ে তাহলে সে ছাড়া পাবে না। পাক্কা ১০ মিনিট পরে রাফি ঝুমুরকে ছেড়ে দিলো। ঝুমুর রাফিকে এক ঝটকায় ছাড়িয়ে দাড়িয়ে গেলো।


-----ঝুমুঃ- এটা কি হলো??

-----রাফিঃ- ওমা তুই কি জানিস না এটা তো একটা simple একটা লিপকিস ছিলো--(ব্যঙ্গ ধরে)

-----ঝুমুঃ- এটা একটা simple লিপকিস ছিলো??--(রেগে মেগে)

-----রাফিঃ- লন্ডনে থাকতে কত শত লিপকিস করেছি তার কোনো হিসেবই নাই। এটা তো আমার কাছে কিছুই না--(ডাহা মিথ্যা কথা বললাম। এটাই আমার লাইফের প্রথম লিপকিস)

-----ঝুমুঃ- কি???--(নাউজুবিল্লাহ, এসব কি শুনছি আমি)

-----রাফিঃ- হ্যা এতে অবাগ হওয়ার কি আছে??--(আমি নিজেও নিজের কথা শুনে অবাগ হচ্ছি)

-----ঝুমুঃ- ছি ছি--( ঠোট মুছতে লাগলাম। চোখে পানি টলমল করতে লাগলো। যে কোনো সময় বৃষ্টি শুরু হতে পারে। এমন সময় নীলা এসে পরলো)

-----নীলাঃ- আপনাদের রোমান্স করা শেষ হলে এবার যেতে পারেন। না হলে কেউ চলে আসতে পারে।

-----রাফিঃ- ওরে নীলুর বাচ্চা, দাড়া আমি আইতাছি--(তেড়ে গিয়ে)---(নীলা তো দৌড়ে পগাড় পার)

-----ঝুমুঃ- বিদেশে গিয়ে তোমার এতোটা অধঃপতন হয়েছে আমিই ভাবতেই পারছি না।--(আর কিছু না বলে সেখান থেকে দৌড়ে চলে আসলাম। না হলে সেখানে আরো কতক্ষণ দাড়িয়ে থাকলে আমার দম বন্ধ হয়ে যেতো)


3rd person:- ঝুমুর চলে যাবার পরে রাফি মনের খুশিতে একটা গান ধরলো। খাবার শেষে সবাই যার যার রুমে চলে গেলো। আর ঝুমু বিছানায় আচড়ে পরে কাদতে লাগলো। শব্দবিহিন কান্না যাকে বলে। কান্না করতে করতে সেখানেই ঘুমিয়ে পড়লো। এরকম ভাবেই ঝুমুর দিন গুলা কাটতে লাগলো। রাফির অপমান আর অবহেলা কথায় কথায় ঝুমুরকে insult করা যেন রাফির একটা অভ্যাস হয়ে দাড়িয়েছে। আর ঝুমুর সেগুলা সব মুখ বুঝে সহ্য করে নেয়। কিছুদিন পরে রাফির জন্মদিন। আর সেটা রাফি নিজেই ভুলে বসে আছে। নীলা মিলি রিয়া ইশিতা জিনিয়া ওরা এসেছে ঝুমুর এ রুমে রাফির জন্মদিনে সারপ্রাইজ প্লানটা কি করে করবে সে বিষয়ে আলোচনা করতে। কারন ঝুমুর সারপ্রাইজ প্লান এর দিক থেকে টপে। ঝুমুরও তাদের খুব সুন্দর করে বলে দিলো কি কি করতে হবে। নেতৃত্বটা ঝুমুর নিজেই নিলো। 


-----ঝুমুঃ- তোমাদের যা যা করতে বললাম তোমরা তা তাই করলেই হবে। বাকিটা আমার উপরে ছেড়ে দাও। আর যে জিনিসগুলার কথা বললাম সেগুলা আমি লিখে লিষ্ট করে দিবো তোমরা তা আনার ব্যবস্থা করো। কিন্তু একটা শর্ত আছে।

-----নীলাঃ- কি শর্ত?? দেখ বোইন কঠিন কোনো শর্ত আমারে দিবি না বলে দিলাম। তাইলে কিন্তু তোর মাথা ফাটাই দিবো।

-----ঝুমুঃ- এটা মোটেও কঠিন শর্ত নয় নীলা, এটা খুবই সহজ।

-----মিলিঃ- শর্তটা কি সেটা তো বলো না হলে বুজবো কেমন করে শর্তটা কি আর কেমন?

-----ঝুমুঃ- বলছি--(একটা লম্বা দম।নিয়ে)--এ সারপ্রাইজ প্লানটা আমি দিয়েছি তোমাদের তাই না। কিন্তু তোমরা কেউ ভুলেও রাফি ভাইয়াকে আমার কথা বলবে না। যে আমি এসব করেছি। শর্ত এটাই। দেখো কত সহজ।

-----রিয়াঃ- ওহহ এ ব্যাপার আমি মনে করচি কি না কি?

-----নীলাঃ- এটা হবে না। ভাইয়া যদি আমার কাছে জানতে চায় তাহলে আমি কিন্তু বলে দিবো তোর কথা।

-----ঝুমুঃ- নীলার বাচ্চা আমি তোকে পরে সব কিছু খুলে বলবো। প্লিজ একটৃ বুজার চেষ্টা কর। আর তোমরা তো আছো তাহলে যে কেউই প্লানটার creadit নিয়ে নাও। প্লিজ আমাকে creadit নিতে জোর করো না।

-----নীলাঃ- কিন্ত--

-----ঝুমুঃ- কোনো কিন্তু না। এটাই ফাইনাল।

-----মিলিঃ- সে না হয় হলো কিন্তু নিবেটা কে?

-----ঝুমুঃ- রিয়া আপু--

-----রিয়াঃ- আমি--(অবাগ হয়ে)

-----ঝুমুঃ- হ্যা তুমি আমাদের সবার থেকে বড় তাই তোমার কথা গুলা গ্রহন যোগ্য হবে। আর রাফি ভাইয়াও খুশি হবে তুমি এসব করেছো শুনে।

-----রিয়াঃ- Thank you বোনু--(খুশিতে জরিয়ে ধরে)

-----ঝুমুঃ- welcome. আচ্ছা তোমরা এখন প্লান মতো কাজ শুরু করে দাও। আর হ্যা আমি যেটা বলেছি সেটা যেন মনে থাকে।


3rd person:- ঝুমু সেখান থেকে চলে গেলো। নীলা ব্যাপারটা মানতে পারছে না। তবুও ঝুমুর এর জন্য রাজি হলো। আর এদিকে birth day ও চলে এসেছে প্রায় অন্যদিকে ওরা রাফির অগোচরেই সব arregment করে ফেলেছে। Birthday এর আগের রাতে যে যার মতো রাতের খাবার খেয়ে রুমে চলে গেলো। এদিকে ঝুমুর এর ইচ্ছে সে রাত ঠিক ১২ টায় রাফিকে wish করবে। সামনাসামনি তো wish করতে পারবে না কারন যদি আবার রাফি ওরে অপমান করে এ জন্য অন্য উপায়ে wish করবে। তাই সে সুন্দর করে একটা ভিডিও তৈরি করে রাখলো। যখন গড়ির কাটায় কাটায় ১২ টন বাজলো তখন একটা unknown নাম্বার থেকে whatsup এ Happy birth day to you লিখে পাঠিয়ে দিলো। এদিকে রাফি তখন সুয়ে সুয়ে ফেসবুকে news feed টানা হিচরা করছিলো। তখন তার ফোনে whats up এ একটা অচেনা নাম্বার থেকে ভিডিও মেসেজ আসলো। সে অবাগ হলো খুব। 


-----রাফিঃ- এতো রাতে কে আমার whats up number এ ভিডিও মেসেজ পাঠালো তাও আবার অচেনা নাম্বার থেকে। দেখতে হচ্ছে তো কি পাঠিয়েছে।


3rd person:- রাফি whatsup এ ডুকলো আর ভিডিওটা ওপেন করলো। ভিডিওটা ছিলো রাফির কিছু ছোট্ট বেলার পিক নিয়ে আর সধ্য তোলা কিছু স্টাইলিস পিক নিয়ে খুব সুন্দর করে ইডিট করে পাঠানো। এতো nice Birth day wise দেখে রাফি যেরকম অবাগ হলো তার থেকে বেশি খুশি হলো। সে তো ভুলেই গিয়েছিল তার Birthday এর কথা।


-----রাফিঃ- কিন্তু এটা পাঠালো কে?? ধুর সকাল বেলা নীলার থেকে জিজ্ঞেস করে নিবো। যদি বাহিরের কেউ পাঠিয়ে থাকে তবে। যাই হোক যার ইচ্ছে হয়েছে পাঠিয়েছে। এখন এ টপিক বাদ।দিয়ে ঘুমানো better.



3rd person:- রাফি ঘুমিয়ে গেলো। কিন্তু অন্যদিকে ঝুমুর এর নির্ঘুম রাত কেটে গেলো রাফির কথা ভাবতে ভাবতে। পরেরদিন খুব ভোরে ঝুমু।ঘুম।থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে গোসল করে বের হয়ে নামাজ পরে সোজা নীলার রুমে চলে গেলো। অন্যসবাই এখন ঘুমে। তাদের মতো নীলাও এখন পরে পরে ঘুমাচ্ছে। ঝুমুর নীলার ঘরে আসতেই দেখে নীলা নাকে তেল দিয়ে হা করে ঘুমাচ্ছে। ঝুমু ওর মাথার পাসে এসে কোমড়ে হাত দিয়ে দাড়িয়ে পাসে থাকা পানির গ্লাস থেকে পানি নীলার মুখে ঢেলে দিলো। হঠাৎ করে পানি পড়ায় নীলা ভয় পেয়ে লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে কাশতে লাগলো। আর অন্যদিকে ঝুমু এ দেখে হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। 


-----নীলাঃ- ওই কোন হারামি রে যে আমার এতো স্বাদের ঘুমটা নষ্ট করেছে। আমি তো।তাকে কাচা চিবাবো।

-----ঝুমুঃ- ওই ওই কি বললি? যা করেছি বেশ করেছি। নিজে মহাআরামে ঘুমাবি আর আমি এদিকে কাজ করতে করতে শহিদ হয়ে যাবো।

-----নীলাঃ- এটা কের করলি?? এটা না করলেও পারতি বোন--(কাদো কাদো ভাবে)

-----ঝুমুঃ- হয়েছে হয়েছে এবার লক্ষি মেয়ে মতো উঠে ফ্রেশ হয়ে নাও তো আমার সোনা বোন নীলু গুলু আলু--(গাল টেনে)

-----নীলাঃ- যাহহ মাফ করে দিলাম। নাহলে তোকে আমি--

-----ঝুমুঃ- কি করতিস?? দেখি নিতিস তাই না?? তোকে কি আমি আমায় দেখতে না করেছি বল?

-----নীলাঃ- ধুর খালি কথা পেচাস। যা তোর লগে কথাই কমু না।

-----ঝুমুঃ- মাথা মোটা এবার যা ফ্রেস হয়ে আয়।


( নীলা ফ্রেস হতে গেলো)


চলবে👉 

Post a Comment

Previous Post Next Post