-পিচ্চি চাচাতো বোন যখন অভিমানি বউ-


 ✔পার্টঃ-০৪✔


3rd person:- রাফি গাড়ির ড্রাইভারদের বাসায় পাঠাই দিলো কারন যাওয়ার সময় সবাই রিকশা করে যাবে। তাই। সন্ধ্যার দিকে সবাই মিলে একটা রেষ্টুরেন্টে খাওয়া শেষ করে। আবারো সবাই যার যার মতো মেতে গেলো। অবশেষে এখন বাসায় যাবার পালা। ৪ টা রিকশা খুজে আনা হলো। রিকশায় উটতে গেলে রিয়া বললো ও রিয়ানের সাথে এক রিকশায় যাবে। মিলি আর জিনিয়া এক রিকশায় বসবে ঠিক করলো। আর নীলা ও ইশিতা ওরা ঠিক করলো এক রিকশায় যাবে। এদিকে ঝুমুর একা।


-----রাফিঃ- সবই তো হলো কিন্তু ঝুমুর একা কি করে যাবে?

-----ঝুমুঃ- problem হবে না। আমি যেতে পারবো। 

-----রাফিঃ- Are you sure?

-----ঝুমুঃ- হুম। 

-----রাফিঃ- ওকে তাহলে যাওয়া যাক।


 ( রিকশা চলতে শুরু করলো। রাফিদের রিকসা গুলা আগে আগে যেতে লাগলো। প্রায় ১৫ মিনিট পরে সবাই বাসায় পৌছে গেলো। একে একে রিকসা থেকে রিয়া ইশিতা মিলি জিনিয়া নীলা নেমে বাড়ির সদর দরজায় দাড়িয়ে বের বাজাতে লাগলো। আর রাফি রিকশা ভাড়া মিটিয়ে ওর কাছে গিয়ে দাড়ালো।, রাফি ওদের জিজ্ঞেস করলো


-----রাফিঃ- হে সবার আজকের দিন কেমন কাটলো?

-----রিয়াঃ- তোমার সাথে বেড়াতে যাওয়ার মজায় আলাদা ভাইয়া।

-----নীলাঃ- Nice day bro.


3rd person:- তখনই ঝুমুর এর ছোট চাচি এসে দরজা খুলে দিলো।


-----ছোট আম্মুঃ- কিরে তোদের ঘুরা ফেরা কেমন হলো?

-----জিনিয়াঃ- অনেক ভালো হয়েছে আম্মু।


  3rd person:- তারপরে সবাই গিয়ে সোফায় গিয়ে হেলান দিয়ে বসে পরলো। সবাই অনেক ক্লান্ত। অনেক্ক্ষণ যাবার পরে নীলার কথায় রাফির টনক নড়লো


-----নীলাঃ- ভাইয়া আমরা তো এসেছে সেই অনেকক্ষণ হলো। কিন্তু ঝুমুর তো এখনো এলো না--(চিন্তিত হয়ে)

-----রাফিঃ- ঠিকই তো ওতো আমাদের পিছনের রিকশায় ছিলো এতোক্ষণে তো এসে যাবার কথা।--(আমারই ভুল হয়েছে। কেন যে ওকে একা একা রিকশায় করে আসতে বললাম)

-----রিয়াঃ- (যতসব আদিক্ষেপতা)-- চিন্তা করার কি আছে একটু পরে এসে যাবে।

-----রাফিঃ- তবুও--(আমার মনে তো অশান্তির ঝড় বয়ে যাচ্ছে। না জানি একা একা কি করতাছে?)


 3rd person:- আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরে রাফি বের হয়ে গেলো ঝুমুরকে খুজতে। আর এদিকে ঝুমুর যে রিকশায় উটেছিলো সেটা এক বৃদ্ধ লোক চালাচ্ছিলো। তাই রিকশা খুব আস্তে আস্তে চলছিলো। কোনো রকম অর্ধেক রাস্তা আসার পরে রিকশার চেন পড়ে যায়। আর বৃদ্ধ বলে যে রিকশা নষ্ট হয়ে গেছে আর যাওয়া যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে ঝুমুর রিকশা থেকে নেমে গিয়ে রিকশার ভাড়া মিটিয়ে চারদিকে তাকিয়ে দেখে আর কোনো রিকশা পাওয়া যায় কি না। কিন্তু এ অসময়ে রাস্তা একদম।ফাকা। তাই সে কোনো রিকশা না পেয়ে আস্তে আস্তে হাটা ধরলো। জিবনে কোনোদিন ঝুমু একা এভাবে দিনের বেলাতেও চলা ফেরা করে না। হয়তো ওর আব্বু না হয় ওর আম্মু না হয় ফ্রেন্ড সার্কেল এর সাথে চলাফেরা করে কিন্তু আজকে এতো রাতে এই নিরিবিলি রাস্তা দিয়ে ঝুমুর একা হেটে যাচ্ছে তাও আবার একা।। ভাবতেই ঝুমুর এর অন্তরাত্মা শুকিয়ে যাচ্ছে। রাস্তা চেনা থাকলেও অজানা ভয়ে বার বার শিউরে উঠছে ঝুমু। তবুও আস্তে আস্তে হাটছে আর আকাস পাতাল ভাবছে।


-----ঝুমুঃ- আসলে রাফি ভাইয়া ইচ্ছে করেই আমাকে একা রিকশায় তুলে দিয়েছে। যাতে করে আমি একা আসার সময় ভয় পাই আর কষ্ট পাই। হ্যা তুমি সফল হয়েছো আমিও ভয়েছি কষ্ট ও পেয়েছি।--( এসব ভাবছি আর হাটছি চোখ দিয়ে পানিও পরছে। আনমনে হাটছি আর এসব ভাবছি হঠাৎ করে কে যেন আমার সামনে এসে পরলো। আমি থমকে।দাড়ালাম। সামনে তাকিয়ে দেখি রাফি ভাইয়া)


3rd person:- রাফি আর ঝুমুর একে অপরের সামনা সামনি দাড়িয়ে আছে। দুজনেই খুব অবাগ হয়েছে। হঠাৎ করে রাফি ঝুমুকে একটান দিয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। অন্যদিকে ঝুমুর তো একদম ফ্রিজ হয়ে জমে গেছে। আর রাফির তো ঝুমুরকে দেখে যেন দেহে প্রান ফিরে এলো 


-----রাফিঃ- sorry তোকে এভাবে একা আসতে দেয়া আমার উচিত হয় নাই।


3rd person:- প্লিজ রাগ করিস না। সরি বললাম তো। ঝুমুর রাফির থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে পাস কাটিয়ে হাটতে যাবে তখন রাফি এসে ঝুমুর এর হাত ধরে ওর পাসে হাটতে লাগলো


-----রাফিঃ- (বাব্বা মহারানির কি অভিমান। হুহ। রাতের আলোর এই হালকা রাস্তার লাইটের আলোতে ঝুমুরকে অনেক অনেক সুন্দর লাগছে। চোখ ফেরাতে পারচি না। লক্ষ করে দেখলাম যে ওর চোখ বেড়ে অঝড়ে পানি পড়তাচে। ও নিঃশব্দে কান্না করতাছে)-- এই ঝুমুর কান্না করতাছিস কেন?? তোকে কি কেউ কিছু বলেছে? 

 (ঝুমুর কান্না করেই যাচ্ছে)---প্লিজ বল কি হয়েছে--(নরম সুরে)

-----ঝুমুঃ- আসলে একা পথ চলার অভ্যাস নাই তো তাও আবার এই নিরিবিলি রাস্তায় রাতের বেলা। খুব ভয় পেয়ে গেছিলাম।

-----রাফিঃ- oh sorry,sorry.প্লিজ কিছু মনে করিস না।

-----ঝুমুঃ- হুম--(চোখের পানি মুছে নিলাম)


3rd person:- আর কোনো কথা হয় নাই তাদের মাঝে। বাসায় ডুকতেই নীলে দৌড়ে এসে ঝুমুকে জরিয়ে ধরে।


-----নীলাঃ- জানিস কত টেনশন হচ্ছিল। এতো।দেরি হলো কেন?

-----ঝুমুঃ- অর্ধেক রাস্তা এসে রিকশাটা খারাপ হয় গিয়েছিলো তাই আর কি।

-----নীলাঃ- আচ্ছা যা রুমে। ফ্রেস হয় নে।

-----ঝুমুঃ- আচ্ছা। 


3rd person:- ঝুমু উপরে চলে গেলো। ফ্রেস হতে আর বাকি সবাই ফ্রেস হয় আবারো আড্ডায় মেতে উঠেছে। মিলি জিনিয়া ওরা সহ রাফির সব মামাতো ভাই। ফারহাদ রাকিব, আছিব, তার সাথে ওর আসার খবর শুনে ওর বেষ্টু ইশান, নীলাশ, তুহিন ইরাদ, আর লারাও ওরাও উপস্থিত সেখানে। রাফি সবাইকে খুব ভালোবাসে। তাই ওর আসার খবর শুনেই সবাই ছুটে চলে এসেছে। রাফিরা পার্ক থেকে আসার পরই এক একজন আগমন করেছে। তাই আড্ডাটা ভালোই জমেছে। ওদিকে ঝুমুর গোসল করে ড্রেস চেঞ্জ করে নিলো। একটা কালো ট্রউজার এর সাথে কালো টি শার্ট পরে নিলো। গলায় একটা কালো স্কার্ফ পরে নিলো। চুল গুলা ছেড়ে দিয়ে round বেল্ট দিয়ে বাধা। আয়নায় নিজেকে একবার দেখে নিলো ঝুমু। ওকে এ অবস্থাতেও অনেক সুন্দর লাগছে। ঝুমুর আজকে ঘটে যাওয়া ঘটনা গুলা ভাবতে লাগলো। রাফি ওকে রাস্তায় বসে যেভাবে জরিয়ে ধরেছিলো মনে হচ্ছিল ওকে ছেড়ে দিলেই বুঝি ঝুমুর হারিয়ে যাবে। জরিয়ে ধরার কথা মনে পরতেই। ঝুমুর এক গাল দুটো লজ্জায় লাল হয়ে গেলো। সব কিছুতেই ঝুমুর এর লজ্জাটা বরাবরই একটু বেশি। আর ইমোশনাল ও একটু বেশি।।কেউ যদি ওকে হার্ট করে কোনো কথা বলে তাহলে ও তার পাল্টা কিছু বলবে না। উল্টো নিজে কেদে কেদে বুক ভাসাবে। আর একটু ভিতু আর নিরিহ টাইপের মেয়ে। চাঞ্চলতা শুধু নীলা আর ওর ফ্রেন্ড সার্কেল এর সামনে প্রকাশ করে। আর কারো সামনে নয়। আর রাফি জানে ঝুমুর এর স্বভাব সম্বন্ধে। যাইহোক ঝুমুর নিচে চলে গেলো। রাফি নুপুর এর রিমঝিম শব্দ শুনে অপরপাসে তাকাতেই দেখে যে ঝুমুর এসে দাড়িয়ে নীলার পাসে।


-----রাফিঃ- O my god ঝুমুরকে দেখতে তো সেই লাগছে। টাস্কি খেয়ে গেলাম আমি ওর উপরে--(মনে মনে)

-----নীলাঃ- এখানে এসে বস ঝুমু--(পাসে সরে)


3rd person:- ঝুমুর একসাথে সবাইকে দেখে যেন লজ্জা লাগছে। নিজেকে কেমন জানি আড়ষ্ট মনে হচ্ছে। তবুও আড়ষ্ট কাটিয়ে সবার সাথে কোনো মতে মিশলো। সবার সাথে কথা বলছে। আর মনে মনে নিজেকে নিজেই গালি দিচ্ছে এরকম লজ্জা পাওয়ার জন্য।


-----ঝুমুঃ- ঝুমুর ছিহহ এ কেমন স্বভাব আমার। এতো লজ্জা কোথা থেকে আসে disgusting. ঝুমুর এতো লজ্জা আর ভয় থাকলে ভবিষ্যতে চলবি কি করে? দেখ সবাই কি সুন্দর করে আড্ডা দিতাছে।--(মনে মনে বিড়বিড় করে)

-----রাফিঃ- সবার সাথে কথা বলতে বলতে হঠাৎ করে ঝুমুর এর দিকে চোখ গেলো। দেখলাম ও চোখ বন্ধ করে কি জানি বিরবির করতাছে। ওর এসব দেখে আমি হেসে ফেললাম। আমি বুজতে পারছি যে ও কেন এসব করছে।

--(হঠাৎ করে ইশান রাফিকে ধাক্কা দিলো)


-----ইশানঃ- কি রে ভাই কাকে দেখে এমন মুচকি মুচকি হাসতাছিস?? Kuc kuc to kala hay.

-----রাফিঃ- হ্যা হ্যা বড় ভাই এতো বুদ্ধি তোমার কোত থেকে আহে। তা বুজলা ক্যামনে।

-----ইশানঃ- বাহ বাহ কার জন্য তোমার মনে এতো রং লেগেছে। হৃদয়ে লেগেছে।দোলা--(চোখ মেরে)

-----রাফিঃ- সময় হলে সবই জানতে পারবি। এখন সব জানার জন্য নাচা নাচি করিস না।

-----ইরাদঃ- আরে তোরা কি এতো ফাসর ফুসুর করিস? আমাদেরকেও তো কিছু বল।

-----ইশানঃ- হে হে না না রে কিছু না--(বাকা হাসি দিয়ে)

-----রাফিঃ- দুর কিছু না বাদ দে।--(হঠাৎ করে আছিব এর দিকে চোখ গেলো। ওর দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে ও ঝুমুর দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ওর এমন চাহনি অন্য কিছু বলছে। মনে তে হচ্ছে ওর গাল চাপটিয়ে ফাটিয়ে দেই। তবুও নিজেকে কন্ট্রোল করলাম। কিছু বললাম না। এখন কাউকে কিছু বলক যাবে না।


চলবে👉 

Post a Comment

Previous Post Next Post